কাজ শেষ না করেই এক যুগ পর উদ্বোধন হলো বিআরটি প্রকল্পের বাস সার্ভিস
কাজ শেষ না করেই এক যুগ পর আজ রোববার বহু ভোগান্তির বিআরটি প্রকল্পের বাস সার্ভিস উদ্বোধন করা হলো। বিজয় দিবস সামনে রেখে আজ থেকে ১০টি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস দিয়ে এই সেবা শুরু হলো।
আজ সকাল ৮টায় গাজীপুরের শিববাড়ী থেকে সরকারের পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ১০টি এসি বাস চলাচলের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহছানুল হক।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, কাজ শেষ হয়নি, তারপরও এটি উদ্বোধন করার কারণ হচ্ছে মানুষের কিছুটা হলেও যাতায়াতের সুবিধা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘বিআরটি একটি রুগ্ণ প্রকল্প, সেটা আমরা আগে থেকেই জানি। অনেকবার সময় বাড়ানো হয়েছে, তারপরও কাজ শেষ করতে পারেনি। এই প্রকল্প মানুষের কোনো উপকারে আসছিল না। তাই প্রাথমিকভাবে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ১০টি বাস দিয়ে এই সেবা চালু করেছি। বাকি কাজগুলো পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করায় মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে আরও ১০টি নতুন ফুটওভার ব্রিজসহ অন্য কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আহছানুল হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন প্রমুখ।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিআরটিসির এসি বাসগুলো শিববাড়ী টার্মিনাল থেকে বিআরটি লেনে বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার পথে চলাচল করবে। শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ টাকা। বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়াও ৭০ টাকা। আর শিববাড়ী থেকে গুলিস্তানের ভাড়া ১৪০ টাকা।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিআরটি লেন দিয়ে শুধু বাসই চলাচল করার কথা। কিন্তু শুরুতে বিআরটিসির ১০টি বাস দিয়ে পুরো বিআরটি লেন আটকে রাখা ঠিক হবে না। এ জন্য কার ও মাইক্রোবাসও বিআরটি লেন দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে। এর ফলে সাধারণ লেনগুলোয় চাপ কমে যাবে।
বিআরটি প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১১ সালে। চার বছরের মধ্যে আধুনিক জোড়া লাগানো বড় বাস চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, বিআরটি দিয়ে ঘণ্টায় ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। যানজট, সিগন্যাল কিংবা অন্য কোনো বাধায় বাস আটকে থাকবে না। কিন্তু প্রকল্প নেওয়ার এক যুগের বেশি সময় পর তা চালু হলো।