হিলি বন্দর দিয়ে আসছে ১২ হাজার মেট্রিক টন ভারতীয় আলু
সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রিতে তোয়াক্কা করছেন না ব্যবসায়ীরা। নানা অজুহাতে বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আলুর দাম। হরতাল আর অবরোধের ফাঁদে আলুর দাম যখন লাগামছাড়া, ঠিক সে সময় ভারত থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কৃষি মন্ত্রণালয় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানির জন্য ১৪টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। আমদানি করা আলু খুচরা বাজারে কত দামে বিক্রি হবে, সে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে জানান,অনুমতি পাওয়া ১৪টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন আলু আমদানি হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে ভারতীয় আলু হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসতে পারে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছে। ভারত থেকে এলসি (ঋণপত্র) চালানের মাধ্যমে এসব আলু আমদানিতে ভারতে ১৭ টাকা কেজি খরচ পড়বে। ভারতের শুল্ক খরচ কেজিতে ২ টাকা। আর বাংলাদেশে শুল্ক খরচ না নিলে পরিবহন খরচ বাদে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা সম্ভব। আর এসব আলু দেশে এলে স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে আলুর দাম আরও কমবে।’
আজ বুধবার সকালে বিরামপুর পৌর শহরের নতুনবাজার সবজির পাইকারি বাজারের আলু ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আড়তে আজ স্টিক আলু (কার্ডিনাল) ৪৪ টাকা কেজি দরে ও দেশি জাতের (পাটনাই) আলু ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে স্টিক আলু ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। সাত দিন আগে স্টিক হিমাগার থেকে আলু ৪৯ টাকা কেজি দরে কিনেছি, সেই আলু এখন লোকসানে বিক্রি করছি। আগের বেশি দামে কেনা আলুতে গাছ বের হচ্ছে, এতে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
নতুন বাজারে আলুর খুচরা ব্যবসায়ী নইমুদ্দিন বলেন, ‘আজ সকাল থেকে বাজারে স্টিক আলু ৫০ টাকা কেজি ও দেশি আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানির জন্য আমরা বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। আমি নিজের প্রতিষ্ঠানের নামেই ৫০০ মেট্রিক টন আলু আমদানির জন্য অনুমতি চেয়েছি। এ বিষয়ে দপ্তরের চূড়ান্ত অনুমোদন ও ঋণপত্র খোলা হলে আগামী রোববারের পর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি করা সম্ভব হবে আশা করছি। ভারত থেকে আলু আমদানি হলে বাংলাদেশ সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই সাধারণ ক্রেতারা আলু কিনতে পারবেন।’