প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে কুড়িগ্রামের ১০ পাঠাগারকে বই উপহার
কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার ১০টি পাঠাগারে প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে বই উপহার দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জেলার ডায়াবেটিস হাসপাতাল মোড়ে প্রগতি সংসদ হলরুমে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন এই বই উপহার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
বই পাওয়া পাঠাগারগুলো হলো কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার দিশারী পাঠাগার, ওরাকল পাঠাগার, যতিনেরহাট সারথি গণপাঠাগার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আউয়াল পাঠাগার, প্রগতি সংসদ পাঠাগার, উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সচেতন শিক্ষার্থী সংঘ পাঠাগার, সাতভিটা গ্রন্থনীড়, বন্ধু পাঠাগার, রাজারহাট উপজেলার গ্রন্থকুঠির পাঠাগার ও ফুলবাড়ী উপজেলার বীরপ্রতীক বদরুদ্দোজা স্মৃতি পাঠাগার। এ সময় প্রতিটি পাঠাগারকে ৩০০টি করে বই উপহার দেওয়া হয়। প্রথম আলোর কুড়িগ্রাম বন্ধুসভা এই বই বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করে।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, বিকাশ সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠাগার ও বৃদ্ধাশ্রমে মোট ৭৫ হাজার বই বিতরণ করবে। আর এই উদ্যোগের সঙ্গে সহযোগী হয়েছে আছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে প্রথম আলো ট্রাস্টে বই কেনার জন্য অনুদানও দিতে পারেন গ্রাহক। অসংখ্য মানুষের ছোট ছোট অনুদানকে একত্র করে এই উদ্যোগের আওতায় ২০২২ সাল পর্যন্ত ৭২ হাজার ৫০০টি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের বই বিতরণ চলমান।
বই বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সফি খান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। এ ছাড়া আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক ফারুক, সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ প্রমুখ।
বই পাওয়ার পর পাঠাগারগুলোর পক্ষ থেকে বিকাশ ও প্রথম আলো ট্রাস্টকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় গ্রন্থকুঠির পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আবু সাঈদ মোল্লা বলেন, ‘প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের দেওয়া বই পেয়ে ভীষণ আনন্দিত। আমার পাঠাগারে শিশু পাঠক বেশি কিন্তু শিশুতোষ বই খুব বেশি ছিল না। আজ প্রথম আলোর উপহারের শিশুতোষ বইগুলো পেয়ে ভালো লাগছে এবং আমার পাঠাগার সমৃদ্ধ হবে। এ ছাড়া দেশসেরা লেখকদের বই আমার এলাকার তরুণ প্রজন্ম ও পাঠকদের পাঠাভ্যাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সাতভিটা গ্রন্থনীড় পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদীন জানান, তাঁর পাঠাগারটি উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত। এখানকার অধিকাংশ অভিভাবক কৃষক। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে এখানকার শিক্ষার্থীদের অন্য বই কেনার সামর্থ্য নেই। এই চিন্তা থেকেই গ্রামে একটি পাঠাগার গড়ে তোলেন তিনি। আজ বিকাশ ও প্রথম আলো ট্রাস্ট থেকে শিশুদের উপযোগী বই দেওয়ায় শিশুরা উপকৃত হবে বলে তিনি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, শিক্ষিত মানুষ হওয়ার জন্য, ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তক পড়তে হয়, কিন্তু মানবিক মানুষ হওয়ার জন্য গঠনমূলক বই পড়তে হবে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বিভিন্ন বড় বড় কবি–সাহিত্যিকদের বই পড়তে হবে। প্রথম আলো ট্রাস্ট ও বিকাশের উদ্যোগে গ্রাম পাঠাগারগুলোকে সমৃদ্ধ করতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। জ্ঞান বিস্তারে বই বিতরণ সত্যি প্রশংসনীয়।