সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে সাতটা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাথালিয়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীরা ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
অবরোধের সময় সেখানে গিয়ে অবস্থান নেন গোপালগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্যরা। পরে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আলাউল হক বলেন, ‘আমাদের এক দফা এক দাবি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোটা বৈষম্য থাকবে না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান জানানোর জন্যই কোটা তুলে নিন। তা না হলে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এর পর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীরা সরকারের জারি করা সেই পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে মাঠে নামেন।