ব্রাহ্মণপাড়ায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ, পাশে চিরকুটে লেখা নির্যাতনের কথা
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বিউটি আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জিরুইন গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় লাশের পাশ থেকে চিরকুট ও মুঠোফোনে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। ওই চিরকুট ও ভিডিওতে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে।
বিউটি আক্তার জিরুইন গ্রামের মামুন মিয়ার মেয়ে। বছর তিনেক আগে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামের ছফিউল্লাহের ছেলে নাজমুল হাসানের সঙ্গে বিউটির বিয়ে হয়। বিউটির স্বামী সৌদি আরবপ্রবাসী। তবে বিউটি স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। মাঝেমধ্যে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসতেন। গতকাল বাবার বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিউটির পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেয়ে বিউটি আত্মহত্যা করেছেন।
বিউটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিউটির বাবার বাড়ির লোকজন বেড়াতে গিয়েছিলেন। শুধু তাঁর বাবা বাড়িতে ছিলেন। বিকেলের দিকে তিনি বাড়ির বাইরে যান। সন্ধ্যার দিকে বিউটির বাবা বাড়িতে ফিরে দেখতে পান, বিউটির ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে তিনি পেছনের জানালায় গিয়ে দেখেন, ঘরের ভেতর বিউটির লাশ ঝুলে আছে। পরে বাড়ির অন্য লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে লাশটি উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানা–পুলিশ বিউটির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এ সময় বিউটির ঘরের একটি টেবিলের ওপর থেকে একটি চিরকুট ও একটি মুঠোফোন পাওয়া গেছে। ওই মুঠোফোনে বিউটির নিজের ধারণ করা একটি ভিডিও আছে।
বিউটির বাবা মামুন মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে তাঁর মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের জ্বালা সইতে না পেরে তাঁর মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নির্যাতনের বিষয়ে তাঁর মেয়ে চিরকুটে এবং ওই ভিডিওতে বর্ণনা করেছেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, বিউটির লাশ আজ শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া লাশের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া চিরকুট ও ভিডিওটি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।