আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের সমর্থনে বিশালাকৃতির বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থিত কয়েকটি বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড দখল করেও ওই প্রার্থীর সমর্থনে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।
অথচ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী বিলবোর্ড লাগানো নিষিদ্ধ। আচরণবিধির ৭ (১-ক) ধারায় বলা হয়েছে, দালান, দেয়াল, গাছ, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে পোস্টার লাগানো যাবে না। আর ৭ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত ব্যানার হবে সাদা-কালো। এর আয়তন হবে ৩ মিটার বাই ১ মিটার। আর পোস্টারের আয়োজন ৬০ সেন্টিমিটার বাই ৪৫ সেন্টিমিটার। ব্যানারে বা পোস্টারে প্রার্থী নিজের ও তাঁর প্রতীকের ছবি ছাড়া আর কারও ছবি ছাপতে পারবে না। তবে প্রার্থী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সে ক্ষেত্রে বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে ছাপাতে পারবেন।
অথচ সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেলিবাজার এলাকায় হাবিবুর রহমানকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তেতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদীনের সৌজন্যে বিশালাকৃতির একটা বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে, যা পোস্টার বা ব্যানারের নির্ধারিত আকার থেকে অনেক বড়। বিলবোর্ডে ছয়জনের ছবি রয়েছে, যা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চণ্ডীপুল এলাকায় সড়ক বিভাজকে থাকা বিজ্ঞাপনী সংস্থার একাধিক বিলবোর্ডের নিচের অংশ দখল করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছবিসহ ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। এসব ব্যানারে হাবিবুরের পাশাপাশি ময়নুল ইসলাম ও আলিমুর রহমান নামের দুজনের ছবিও আছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে এমন বিলবোর্ড সাঁটানো হয়নি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এসব তফসিল ঘোষণার আগেও সাঁটানো হতে পারে।’
এ আসনে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী (ট্রাক), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম), স্বতন্ত্র মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মইনুল ইসলাম (মিনার) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ঊর্মি রায় বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।