হাসপাতালে বিদ্যুতের তার কাটল দুর্বৃত্তরা, রোগীদের ১০ ঘণ্টার ভোগান্তি
দিনাজপুর সদর উপজেলায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বিদ্যুতের তার কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। অস্ত্রোপচারও বিঘ্নিত হয়েছে। এই সময়ে চালু হয়নি নিজস্ব জেনারেটরও। গতকাল শনিবার রাত পৌনে দুইটায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর পুনরায় সংযোগ দেওয়া হয় আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টায়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪২ মিনিটে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রথমে বিষয়টিকে বিদ্যুৎ যাওয়া–আসার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখে তারা। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না আসায় প্রকৃত কারণ খুঁজতে থাকে। সকালে বিদ্যুতের সার্ভার কক্ষের পাশে মেইন লাইনের তিনটি তার কাটা অবস্থায় দেখতে পায়।
রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই হাসপাতালে পুরুষ মেডিসিন ও সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ৫০ জন; মহিলা মেডিসিন ও সার্জারি ওয়ার্ডে ৬৩ জন; প্রসূতি ওয়ার্ডে ৩৮ জন; শিশু ওয়ার্ডে ২২ জন; ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২২ জন; কেবিনে ৬ জনসহ মোট ২০১ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। অন্যদিকে রোববার বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছয়জনের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল।
রোববার দুপুরে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের ২৬ নম্বর বেডে শুয়ে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। গতকাল গরমও ছিল বেশি। রাতে একদিকে মশার কামড়, অন্যদিকে গরমে প্রচণ্ড কষ্ট পাইছি। সারা রাত ঘুমাইতে পারিনি। বিশেষ করে মুরব্বিদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছিল। এত বড় একটা হাসপাতাল এতগুলো রোগী ভর্তি আছি, শুনছি হাসপাতালে নাকি জেনারেটর আছে, কিন্তু এত গরমেও চালু করেনি।’
শিশু ওয়ার্ডে থাকা ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে আছেন এক মা। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বাচ্চার জ্বর-সর্দি। ঠিকমতো খায় না। তার ওপর সারা রাত গরমে, ঘামে অস্থির হয়ে কান্নাকাটি করছে। সারা রাত ঠিকমতো ঘুমায়নি। কিছুক্ষণ আগে বিদ্যুৎ এল, এখন ঘুমাচ্ছে।’
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা পারভেজ সোহেল রানা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, চুরি কিংবা নাশকতার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা হাসপাতালে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এর আগেও মেইন লাইনের তার কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় বিদ্যুতের সংযোগ সচল করা হয়েছে। এ বিষয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
জেনারেটর চালুর বিষয়ে পারভেজ সোহেল বলেন, হাসপাতালের জেনারেটর সচল আছে। প্রতি ঘণ্টায় ওই জেনারেটরে জ্বালানি খরচ হয় প্রায় ৪৫ লিটার। কিন্তু তার কেটে দেওয়ার কারণে জেনারেটরও সচল করা সম্ভব হয়নি।