কুষ্টিয়ায় ঘুষি মেরে নারী সহকর্মীর ঠোঁট ফাটিয়ে দিলেন পুরুষ কাউন্সিলর

কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র

ঘুষি মেরে কুষ্টিয়া পৌরসভার এক সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঠোঁট ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুরুষ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ওই নারী কাউন্সিলের নাম মোছাম্মত পারভীন। তিনি কুষ্টিয়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আর অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম কৌশিক আহম্মেদ। তিনি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এ ঘটনায় তাঁরা দুজনই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে পৌরসভায় কাউন্সিলরদের মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পৌরসভা প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

নারী কাউন্সিলর মোছাম্মত পারভীন বলেন, কাউন্সিলর কৌশিক নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি পেছন থেকে ‘বাবা-সোনা’ বলে ডাক দেন। এরপর কৌশিক এসে তাঁকে ‘গালি’ দিয়ে ডাক দিয়েছেন কেন—বলেই কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। ঘুষি মেরে তাঁর ঠোঁট ফাটিয়ে দিয়েছেন কৌশিক। মোছাম্মত পারভীন আরও বলেন, ‘আমি তাঁর বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর কৌশিক আহম্মেদ বলেন, ‘ওই নারী কাউন্সিলর প্রতিদিন মদ পান করে পৌরসভায় আসেন। তিনি আমাকে গালি দিয়ে ডাক দেন। আমি প্রতিবাদ করায় তিনি চায়ের কাপ ছুড়ে মারেন। সেই কাপ আমার গায়ে এসে লাগে। এরপর আমি তাঁকে ঘুষি মেরেছি।’

কাউন্সিলর কৌশিক নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় আমি পেছন থেকে বাবা-সোনা বলে ডাক দিই। এরপর কৌশিক এসে আমাকে গালি দিয়ে ডাক দিয়েছি কেন—বলেই কিল–ঘুষি মারতে থাকে। ঘুষি মেরে আমার ঠোঁট ফাটিয়ে দিয়েছে কৌশিক। আমি তার বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মোছাম্মত পারভীন, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কুষ্টিয়া পৌরসভা

এদিকে মদ পান করার কথা বললে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই নারী কাউন্সিলর। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা তাঁর স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে কৌশিককে মারতে যান। এরপর পুলিশ তাঁকে সরিয়ে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কাউন্সিলররা জানান, ঘটনা যা–ই হোক, এভাবে একজন নারী কাউন্সিলরকে ঘুষি মারা ঠিক হয়নি। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয় বলে জানান তাঁরা।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা জানান, নারী কাউন্সিলরের ওপর হামলার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ আনিসুর রহমান বলেন, ‘মেয়রের হস্তক্ষেপে আমরা সুষ্ঠু সমাধান চাই।’ বক্তব্য জানার জন্য কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার, কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি।’