ক্ষীর-চিনিতে বানানো সরিষাবাড়ীর ‘প্যাড়া’ একটু বেশিই মিষ্টি
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মিষ্টি দ্রব্যের মধ্যে ‘প্যাড়া’ অন্যতম। যাঁরা প্যাড়ার ভক্ত, তাঁরা রীতিমতো ফরমাশ দিয়ে বানিয়ে নেন এই মিষ্টি। জেলার ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টির মান ধরে রেখেছেন এই সময়ের কারিগরেরাও। প্যাড়ার স্বাদে গর্বিত এই অঞ্চলের মানুষ।
প্যাড়ার জন্য সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার শিমলা বাজারের মধু মিষ্টান্ন ভান্ডারের সুনাম আছে। এই দোকানের মালিক মধুসূদন চন্দ (৭০) বলেন, তাঁর দাদা মনমোহন চন্দ, বাবা সুশীল চন্দ ও তিনি—তিন পুরুষ ধরে বাজারের এই দোকানে ব্যবসা করছেন। ১২০ বছরের ব্যবসা তাঁদের। টিনের চৌচালা এই দোকানেই মানুষ আসেন প্যাড়া কিনতে। তবে এখন অনেক দোকানেই প্যাড়া বিক্রি হয়।
মধুসূদন চন্দ বলেন, গরুর দুধ ও চিনি প্যাড়া তৈরির মূল উপকরণ। এক কেজি প্যাড়া বানাতে চার কেজি দুধ লাগে। চার কেজি দুধ জ্বাল দিয়ে আধা কেজি ক্ষীর বানাতে হয়, সেই ক্ষীরের সঙ্গে আধা কেজি চিনি মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে প্যাড়া বানাতে হয়। প্রতি কেজি প্যাড়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি কেজিতে ৭০ থেকে ৭২টি প্যাড়া ধরে। সরিষাবাড়ীতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি প্যাড়া বিক্রি হয় বলে তিনি জানালেন।
মধুসূদন বলেন, তাঁর দোকানের প্যাড়া দেশের অন্যান্য এলাকায় যেমন যায়; যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, মালোয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, জাপানসহ নানা দেশে। প্যাড়া শুকনা হওয়ায় দূরদূরান্তে বহনে সুবিধা। সরিষাবাড়ীতে কেউ বেড়াতে এলে বেশি করে এই মিষ্টি কিনে নিয়ে যান। অন্য মিষ্টির চেয়ে প্যাড়া একটু বেশি মিষ্টি, এটাও অনেকের পছন্দের কারণ।
শিমলা বাজারের কালা চাঁদ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক অনিল কুমার ঘোষ (৭৪) বলেন, তাঁরা তিন পুরুষ ৭০ বছর ধরে প্যাড়া বিক্রি করে আসছেন। আর ৬০ বছর ধরে প্যাড়ার ব্যবসার কথা জানালেন একই বাজারের সংগীতা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক সমীরণ কুমার ঘোষ (৪৮)।
সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সুকান্ত সাহা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সপরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন তিনি। দেশে এলে তিনি অবশ্যই প্যাড়া নিয়ে যান বন্ধু-স্বজনদের জন্য।