সুনামগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শওকত আলী (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ধলুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, ধলুয়া গ্রামের বাসিন্দা শওকত আলী ও তৈয়ব আলীর লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। আগেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলাও আছে। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই পক্ষ দুই প্রার্থীর হয়ে গ্রামে কাজ করে। এতে বিরোধ আরও বাড়ে। নির্বাচনে তৈয়ব আলী ও তাঁর পরিবারের লোকজন সুনামগঞ্জ-২ আসনের (দিরাই-শাল্লা) আওয়ামী লীগের প্রার্থী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের পক্ষে এবং শওকত আলী ও তাঁর পরিবারের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়া সেন গুপ্তার পক্ষে ছিলেন।
পূর্ববিরোধের জেরে আজ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শওকত আলী আহত হন। দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত ইলিয়াস মিয়া (২০), ফরহাদ (২২), তাজু মিয়া (৫০), সায়েক মিয়া (১৬), জয়মুন্নুর (৩৫), ফিরোজ আলী (৪০), মতিন মিয়া (৩০), সিদ্দিক আহমেদ (৭০), আলী হোসেন (৩৫), মিজানুর রহমান (২৪), আল আমীন (৩৩), ফয়েজ আহমদকে (৩০) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের পরদিন দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। প্রতিপক্ষের মামলায় তাঁদের লোকজন আজ আদালতে হাজিরা দিতে যান। এ সুযোগে তৈয়ব আলীর লোকজন তাঁদের ওপর হামলা করেন। নির্বাচনের জেরে এ হামলা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সংঘর্ষের পর তৈয়ব আলীর পক্ষের লোকজন এলাকাছাড়া। অভিযোগের বিষয়ে তৈয়ব আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। এ বিষয়ে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই পক্ষের বিরোধ পুরোনো। এর জেরেই সংঘর্ষ হয়েছে। এখানে নির্বাচনের কোনো বিষয় যুক্ত নয়।’
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে আগেও মারামারি হয়েছে। পূর্ববিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে এবার নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সংসদ সদস্য জয়া সেন গুপ্তা (কাঁচি)। তিনি আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের স্ত্রী। নির্বাচনে ৬৭ হাজার ৭৭৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ পান ৫৮ হাজার ৬৭২ ভোট। আসনে ভোটের দিন কয়েকটি কেন্দ্রে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়। ভোটের ব্যবধান বেশি হওয়ায় সেখানে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি।