রাজশাহীতে অপহৃত নারী চিকিৎসকের সন্ধান মেলেনি, অপহরণকারীদের গাড়ি শনাক্ত

অপহরণপ্রতীকী ছবি

রাজশাহীতে নিজ বাসা থেকে অপহৃত হওয়ার ২৮ ঘণ্টা পরও নারী চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

একই সঙ্গে ওই গাড়িতে অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের বাবাকেও তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় রাস্তায় চিকিৎসকের বাবাকে ফেলে চলে যায়। গতকাল সোমবার রাতে অপহরণের অভিযোগে তিনি (চিকিৎসকের বাবা) বাদী হয়ে রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের মাকে (৫১) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অপহরণের শিকার ওই চিকিৎসক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাঁদের বাসা রাজশাহী নগরে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে জানান, পুলিশের দিক থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারের সব ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গ থানা থেকে তাঁর বাবাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বাদী হয়ে রাতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি নম্বরসহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এই নম্বর বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কড়া নজরদারি চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, বাদী অপহরণকারী ব্যক্তিদের চিনতে পেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তিনি এজাহারভুক্ত আসামিদের বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি।

অপহৃত চিকিৎসকের মামা আজ সকালে প্রথম আলোকে জানান, আজ সকাল সাতটার দিকে তাঁর দুলাভাইকে আবার থানায় ডেকে নেওয়া হয়। তিনি কথা বলতে পারছেন, কিন্তু ভীষণ অসুস্থ। তাঁকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তিনি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল রয়েছেন।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল অপহৃত চিকিৎসকের মা জানিয়েছিলেন, গতকাল ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তাঁর স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। একটু পরই তালা খোলার শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে যান, এত তাড়াতাড়ি নামাজ না পড়ে ফিরে আসছেন কি না, তা দেখতে। দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁর স্বামীকে জিম্মি করে চাবি নিয়ে এসেছে। এ সময় অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর তারা তাঁর গলা চেপে ধরে। তারা যখন তাঁকে ছেড়ে দেয়, তখন তিনি দৌড় দিয়ে নিচে নেমে রাস্তার ওপর পড়ে যান। ততক্ষণে অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁর মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে চলে যায়।