স্বাস্থ্যমন্ত্রী আসার খবরে ৫ ঘণ্টা বন্ধ ছিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবৈধ ওষুধের দোকান
বৈধতা না থাকার পরও দীর্ঘদিন ধরে চলছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে নির্মিত ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের’ দোকানটি। স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েও দোকানটি বন্ধ করতে পারেননি। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আসার খবরে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পাঁচ ঘণ্টা দোকানটি বন্ধ রেখেছিলেন মালিক।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। সেখানকার কর্মসূচি শেষে ঢাকায় ফেরার পথে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শহীদনগর ট্রমা সেন্টার পরিদর্শনে আসার কথা ছিল।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রী আসার খবর পেয়ে দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে নির্মিত সরকারি ‘ন্যায্যমূল্যে’র ওষুধের দোকানটি বেলা একটার দিকে বন্ধ করেন মালিক মো. মহিউদ্দিন সরকার। বিকেল পাঁচটার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা অতিক্রম করার খবর শুনে দোকানটি আবার তালা খুলে ওষুধ বিক্রি শুরু করেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি সরকারি ন্যায্যমূল্যে ২৪ ঘণ্টা ওষুধ বিক্রির সুবিধার্থে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে একটি ওষধের দোকান চালু করা হয়। দোকানটি পরিচালনার জন্য ২০১০ সালে কুমিল্লার সিভিল সার্জনের কার্যালয় তিন বছরের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। মেসার্স সরকার মেডিকেল হলের মালিক মো. মহিউদ্দিন সরকার দরপত্রের মাধ্যমে দোকানটি পরিচালনার সুযোগ পান। ২০১৩ সালের পর থেকে নানা কারণে দরপত্র আহ্বান করা বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরের দোকানটি অপসারণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) মো. মহিউদ্দিন এবং কুমিল্লার সিভিল সার্জন নাছিমা আকতার আকস্মিক দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে আসেন। সেখানে ওষুধের দোকানের বৈধ কাগজপত্র না পেয়ে দোকানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পরে বুধবার বিকেলে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আরাফাতুল আলমও বৈধ কাগজপত্র না থাাকায় দোকানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তবে তাতে কর্ণপাত করেননি মহিউদ্দিন সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মহিউদ্দিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে আর কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। আগের দরপত্রের মাধ্যমেই তিনি বৈধভাবে ওষুধের দোকান পরিচালনা করে আসছেন।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরেও ওষুধের দোকান অপসারণের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. তৌহিদ আল হাসান। তিনি বলেন, দুই বছর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর ওষুধের দোকান পরিচালনার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন। বৈধ কাগজপত্র না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতা বলে সরকারি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানটি খোলা রাখছেন মহিউদ্দিন সরকার।