ময়মনসিংহে শিক্ষককে তুলে নেওয়ার চেষ্টা, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ময়মনসিংহের ভালুকায় এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ডে এ কর্মসূচি পালন করে উপজেলার ভরাডোবা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গতকাল সোমবার ভরাডোবা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্র চন্দ্র রায়কে বিদ্যালয় থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায় একটি দল। এ ঘটনার বিচার চেয়ে তারা আজ বিক্ষোভ করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) প্রশাসনের লোকজন বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
শিক্ষক বীরেন্দ্র চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষক সাময়িকভাবে বহিষ্কার থাকায় কয়েক মাস তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। গত ২৫ জুলাই ভালুকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাকে সভাপতি করে স্কুল পরিচালনা কমিটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর সেটি বাতিল হয়েছে বলে জানতেন। এর মধ্যে ৩ অক্টোবর সভাপতি বাদে বাকি কমিটি অনুমোদন হয়। ২২ অক্টোবর বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ইউএনওকে জানান। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক স্বপদে বহাল হন।
বীরেন্দ্র চন্দ্র বলেন, গতকাল স্কুল পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার দিন নির্ধারণ করে দেন ইউএনও। প্রধান শিক্ষক স্বপদে বহাল হওয়ায় সভায় তাঁর (বীরেন্দ্র) থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু কমিটির অভিভাবক সদস্য জসিম উদ্দিন লোকজন নিয়ে তাঁকে ইউএনও কার্যালয়ে সভায় যেতে বলেন। তিনি যেতে না চাওয়ায় একদল লোক পাঠিয়ে স্কুল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। তখন তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি তাঁদের বোঝালে মাঝপথে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা জানাজানির পর শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। তিনি বলেন, ‘৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে কখনো পড়িনি। ইউএনও বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় আইনি পদক্ষেপে যাব না।’
তবে জসিম উদ্দিন দাবি করেন, ওই শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভায় অংশ নিতে ইউএনও কার্যালয়ে সবাই একসঙ্গে যাচ্ছিলেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে আজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবরে সেনাবাহিনী, র্যাব-১৪, ভালুকা মডেল থানা-পুলিশ ও ইউএনও আলীনূর খান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়ে বিদ্যালয়ে ফিরে যায়। পরে মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভালুকার ইউএনও আলীনূর খান প্রথম আলোকে বলেন, পরিচালনা কমিটির সভায় আসা নিয়ে ঘটনাটি ঘটে। কাল বুধবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। শিক্ষককে নাজেহালে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।