ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রেমিক হবে, প্রেমের চিঠি লিখবে: সাদ্দাম হোসেন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রেমিক হবে, ভালোবাসতে শিখবে। ছাত্রলীগের কর্মীরা মেয়েদের কাছে প্রেমের চিঠি লিখবে। একই সঙ্গে যারা মেয়েদের ওপর আঘাত করে, নিপীড়ন করার চেষ্টা করে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানাভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে আমরা শান্তিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারি।’
আজ শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ পৌর ওসমানী স্টেডিয়ামে এক বিশেষ কর্মী সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগে সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে বিশেষ এই কর্মী সভার আয়োজন করা হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের শ্লীলতাহানি করে, কটূক্তি করে, উত্ত্যক্ত করে ছাত্রলীগে তাদের স্থান নেই। আমাদের মেয়েদের নিরাপত্তা ছাত্রলীগকে নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্রলীগে লাঞ্ছনাকারীদের স্থান নেই, নিপীড়নকারীদের স্থান নেই। ছাত্রলীগে চাঁদাবাজদের কোনো স্থান নেই। যারা মেয়েদের সম্মান করতে পারবে, তাদের স্থান ছাত্রলীগে আছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা এটি দেখতে চাই।’
টেন্ডারের খবর রাখা ছাত্রলীগের কাজ নয় মন্তব্য করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে অপকর্মে জড়িয়ে সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করে ব্যক্তিস্বার্থ বজায় রাখা ছাত্রলীগের লক্ষ্য নয়। ছাত্রসমাজ ও শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার উন্নত করতে কাজ করে ছাত্রলীগ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুন্দর পরিবেশ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য ছাত্রলীগ কাজ করবে।’
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘যারা জাতির পিতার হত্যাকারী, যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তারা এখনো রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছে। তাদের অনেকেই গণতন্ত্রের বেশ ধরে আজ রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ছাত্রসমাজ তাদের কখনোই মেনে নেবে না।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই সংগঠন শুধু রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এই সংগঠন আগামী দিনে শুধু রাজনীতিক তৈরি করবে না; আলোকিত ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আলোকিত মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান।’
ছাত্রলীগকে অর্থ বানানোর মেশিন নয় মন্তব্য করে সাদ্দাম বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাদের স্মার্ট লিডার হতে হবে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগঠন পরিচালনা করতে হবে। সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র মেনে চলতে হবে। সমস্যা তৈরি করা নয়, সমস্যা সমাধান করাই ছাত্রলীগের কাজ।’ তিনি বলেন, ‘আধিপত্য আমাদের শক্তি নয়। আমাদের শক্তি হচ্ছে নৈতিকতা, বিনয় ও ভালোবাসা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো ও সুন্দর আচরণ করতে হবে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিতে হবে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগ আত্মসমালোচনা পছন্দ করে। ছাত্রলীগের কর্মীরা যেকোনো ভুলকে শুধরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার হিম্মত রাখে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে “মিডিয়া ক্যু” করা সঠিক সাংবাদিকতা বলে আমরা মনে করি না।’ তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ ১০০টি ভালো কাজ করলে একটিও নিউজ হয় না। আর ছাত্রলীগ একটি খারাপ কাজ করলে ১০০টি নিউজ হয়। আমরা গণমাধ্যমের সঠিক দায়িত্বশীলতা দেখতে চাই।’
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনে সভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান)। এ সময় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা উপস্থিত ছিলেন। তবে অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইসহ অনেক নেতা অনুপস্থিত ছিলেন।