পটুয়াখালীতে ট্রলারডুবির দুই দিন পর নিখোঁজ চারজনের লাশ উদ্ধার
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ থাকা ৮ বছরের শিশু মারিয়া ওরফে মারুফার লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে দশমিনার পাতার চর এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে ট্রলারডুবিতে বরসহ মোট পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হলো। দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারিয়া ওরফে মারুফা উপজেলার দক্ষিণ রণগোপালদি আউলিয়াপুর এলাকার বিল্লাল মুন্সীর মেয়ে।
পটুয়াখালীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মো. রেজোয়ান বলেন, আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে পাতার চর এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ খাদিজার (৮) লাশ উদ্ধার করেন তাঁরা। এর আগে আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ট্রলারডুবির ঘটনাস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বদনার চর এলাকার তেঁতুলিয়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ বর রাব্বি হাওলাদার (২০) ও তাঁর মা সেলিনা বেগমের (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে গত শুক্রবার বিকেলে তেঁতুলিয়া নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনার পরপরই জেলেরা ওই ট্রলারের যাত্রী লিপি বেগম (৩০) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করেন। এ নিয়ে ট্রলারডুবিতে পাঁচজন মারা গেছেন। ট্রলারডুবিতে যেহেতু আর কোনো নিখোঁজের তথ্য নেই, তাই তাঁরা উদ্ধার অভিযান শেষ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে নববধূকে নিয়ে বরযাত্রীরা গত শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ট্রলারে তেঁতুলিয়া নদী পাড়ি দিয়ে দশমিনার উত্তর রণগোপালদি গ্রামে ফিরছিলেন। পথে তেঁতুলিয়া নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি উল্টে নদীতে ডুবে যায়। এ ঘটনার পর নদীতে জেলেরা ওই দিনই ট্রলারের যাত্রী লিপি বেগমের লাশ তেঁতুলিয়া নদী থেকে উদ্ধার করেন। নিখোঁজ হন বর রাব্বি হাওলাদার, তাঁর মা সেলিনা বেগমসহ চারজন। ঘটনার পর পটুয়াখালী ও বরিশালের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিসহ উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে তেঁতুলিয়া নদীতে উদ্ধারকাজ শুরু করে।
এদিকে পরদিন স্থানীয় লোকজন ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করলেও নিখোঁজ থাকেন বর রাব্বি হাওলাদারসহ চারজন। পরে আজ সকাল থেকে রাব্বি হাওলাদারসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
দশমিনা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিজা নাজ নীরা বলেন, ট্রলারডুবিতে নিহত ব্যক্তিদের লাশ আজ বিকেলে নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংসদ সদস্য নিহত ব্যক্তিদের জানাজায় অংশ নেন এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ব্যক্তিগতভাবে তিনি মোট ৩০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন।