ভারী বর্ষণে সাভার পৌরসভার কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা, চলাচলে ভোগান্তি
সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকার সাভার পৌরসভার বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধ তৈরি হয়। কখনো কখনো সড়ক উপচে পানি আশপাশের দোকান ও বাড়িঘর প্লাবিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের ভারী বর্ষণে নতুন করে জলাবদ্ধ তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি, বাজার রোড, উলাইল, রাজাসন এলাকার বিভিন্ন সড়কের কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধ পরিস্থিতে দেখা গেছে। অধিকাংশ সড়কই খানাখন্দে ভরা। ঝুঁকি নিয়ে চলছে রিকশা ও ইঞ্জিনচালিত বিভিন্ন যানবাহন।
সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন খান নঈম বলেন, সাভারে অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হচ্ছ। ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নগরায়ণের ক্ষেত্রে কোনো মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) নেই। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ফলে পৌর এলাকার ড্রেনগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি যেসব জায়গায় ড্রেনগুলো সচল ছিল, ওই জায়গায় পানি জমাট বাঁধার কারণে ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া পৌর এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল দখলের পর ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার পানি বের হতে পারছে না। দ্রুত পরিকল্পিত নগরায়ণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণ না করা হলে ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে সাভারবাসীকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সভার পৌরসভার কাছে বংশী ও ধলেশ্বরী নদীসহ একাধিক খাল থাকলেও পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
আজ সকালে ব্যাংক কলোনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গার্লস স্কুল রোডের পাশের ড্রেনটি ময়লা পানিতে পূর্ণ। পাশেই একটি বাসার উঠানে জমে আছে নোংরা পানি। গতকাল রাতে বৃষ্টির পর সড়কের ড্রেনের পানি ঢুকে পড়েছে বাসার উঠানে। বাসার ভাড়াটিয়াদের প্রায়ই এমন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। তাই কেউ কেউ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসা ছেড়ে দেওয়ার।
ব্যাংক কলোনি এলাকার ভাড়াটিয়া মো. শাওন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাসা থেকে ময়লা পানি ড্রেন দিয়ে বের হওয়ার কথা। উল্টো ড্রেনের ময়লা পানি বাসায় ঢুকছে। ভাবছেন বাসা ছেড়ে দেবেন।
স্থানীয় পোশাক কারখানার শ্রমিক রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, উলাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়লার মোড় পর্যন্ত রাস্তা একদমই খারাপ। অটোরিকশা না পেলে হাঁটুসমান পানি পার হয়ে কারখানায় যেতে হয়। অটোরিকশাতে যেতেও ভয় লাগে।
এ বিষয়ে সাভার পৌরসভার মেয়র মো. আবদুল গণি প্রথম আলোকে বলেন, সাভারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেক ভালো। পানি নেমে যেতে একটু সময় লাগে। ড্রেন পরিষ্কার রাখতে নিয়মিতই কাজ করা হচ্ছে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভার কয়েকজনকে ব্যাংক কলোনি এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার করতে দেখা যায়। মাস্টার রোলে (চুক্তিভিত্তিক) কর্মরত মানিক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এলাকার লোকজন খালি অভিযোগ দেন। বাসার মালামাল নিতে গিয়ে ড্রেন ভেঙে ফেলায় ব্লক হয়ে গেছে। পলিথিনসহ নানা জিনিস ড্রেনে ফেলায় পানি যেতে পারছে না। তাই পরিষ্কার করছেন।