বরিশালে মাহিন্দ্রাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

বরিশালে পরিবহনশ্রমিককে মারধরের ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় কয়েকটি মাহেন্দ্র ও বাস ভাঙচুর করা হয়। শনিবার রাতে বরিশালের নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

বরিশালে তিন চাকার যানের (মাহিন্দ্রা) শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ তিন চাকার যানের শ্রমিকেরা তিনটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা এবং পরে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ৵ করে এ সময় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকার সামনে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৫টি মাহিন্দ্রা ও তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয়।

এর আগে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল থেকে মাদারীপুরগামী একটি বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রমের সময় হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই বাসশ্রমিককে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাসশ্রমিকেরা।

বাসশ্রমিকদের অভিযোগ, দুই বাসশ্রমিককে মারধর করা ব্যক্তিরা জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্ঠ। এ ঘটনার পর থেকে বাস শ্রমিকেরা অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখে।

বাস চলাচল বন্ধ হওয়ার পর তিন চাকার যানের (মাহিন্দ্রা) চালকেরা অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহন করলে বাসশ্রমিকেরা তাতে বাধা দেন। কিন্তু সেই বাধা উপেক্ষা করেন তিন চাকার যানের শ্রমিকেরা। এতে বাসশ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হন। এর জের ধরে সন্ধ্যায় নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডের অপর প্রান্তে তিন চাকার যানের স্ট্যান্ডে এসে ক্ষুব্ধ বাসশ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ১৫টি মাহিন্দ্রা ভাঙচুর করেন। এতে মাহিন্দ্রার চালক রাজু মিয়া, শাকিল আহমেদ ও আবাদুর রহমান আহত হন। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মাহিন্দ্রাচালক ও শ্রমিকেরা সড়কের ওপর ভাঙচুর করা মাহিন্দ্রা রেখে মহাসড়ক অবরোধ করেন। একই সঙ্গে কাশিপুরের দিক থেকে লাঠিসোঁটা হাতে আরেক দল মাহিন্দ্রা শ্রমিক বিক্ষোভ করে নথুল্লাবাদে এসে অবরোধকারী মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ সড়কের ওপর থেকে মাহিন্দ্রা ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের সরে যেতে বললে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল, কাচের বোতল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে জড়ান। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। তবে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ছিল।

রাত পৌনে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কিছু রুটে সীমিত আকারে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভুইয়া বলেন, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।