মধ্যরাতের বিস্ফোরণে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত

নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর। এপারে টেকনাফফাইল ছবি

গত এক সপ্তাহ শান্ত থাকার পর আবার বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপল মিয়ানমারের রাখাইনের সীমান্তবর্তী টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা। রাখাইনের মংডু টাউনশিপের আশপাশের গ্রাম থেকে গতকাল বুধবার মধ্যরাতে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে।  গতকাল রাতের পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বিকট কোনো বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল মধ্যরাতে হঠাৎ বিকট শব্দে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। এতে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার পর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে মংডু টাউনশিপ থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে বলে জানিয়েছেন সাবরাং ইউনিয়নের আছারবনিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও আমির হোসেন। তাঁরা বলেন, মাঝরাতে আকাশে যুদ্ধ বিমানের চক্করের পাশাপাশি বোমা বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে।

টেকনাফ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওযার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আরাফা বেগম বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফ পৌরসভা, নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, কায়ুকখালীয়পাড়া, পল্লানপাড়া, কুলালপাড়া, খানকার ডেইলসহ বেশ কিছু গ্রাম। সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় এখানকার মানুষ বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কখন কার ঘরে গুলি এসে পড়ে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টেকনাফ সদর ও পাশের সাবরাং ইউনিয়নের বিপরীতে মংডু টাউনশিপের অবস্থান। মাঝখানে চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদী দুই দেশকে বিভক্ত করে রেখেছে। টানা পাঁচ মাস মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে লড়াই-সংঘাত চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের আশপাশে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৫টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু টাউনে থাকা সেনা ও বিজিপির দুটি ব্যাটালিয়ন দখলের জন্য লড়ছে তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মধ্যরাতে বিকট শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত। রাখাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় টেকনাফ সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।