উজানে বৃষ্টি, কলমাকান্দায় এক দিনের ব্যবধানে আবার পানি বাড়ছে
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় এক দিনের ব্যবধানে আবার নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত বুধবার বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও আজ শুক্রবার সকাল থেকে আবার বাড়তে শুরু করে। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার থেকে কলমাকান্দায় পানি কিছুটা কমছিল। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভারতের চেরাপুঞ্জি, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায় ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পানি আবার বাড়ছে। তবে জেলার কংস, সোমেশ্বরী, মগড়া, ধনুসহ অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। পানি বাড়লেও স্থায়ী বা বড় ধরনের কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।
পাউবো ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ১৭ জুন নেত্রকোনার কলমাকান্দায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ওই দিন উপজেলার উব্দাখালী নদীর ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপরে চলে যায়। সপ্তাহখানেক পর পানি কিছুটা কমে আসে। কিন্তু গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দ্বিতীয় দফায় আবার পানি বেড়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত উব্দাখালী নদীর বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। পরে পানি কমে গতকাল রাত ৯টার দিকে ৩৬ সেন্টিমিটারে স্থির ছিল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ৯টার পর থেকে উব্ধাখালী নদীর পানি আবার বাড়ছে। ইতিমধ্যে পানি বেড়ে পোগলা ইউনিয়নের কালাকোনা, জীবনপুর, গোয়াতলা; কৈলাটি ইউনিয়নের খলা, চারালকোনা, কনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুর; বড়খাপন ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামসহ উপজেলার প্রায় ৬৮টি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় স্থানীয় লোকজন চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ও মেঝেতে পানি উঠেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন জানান, উপজেলার ধীতপুর, বাহাদুরকান্দা, আমতৈল বাসাউড়াসহ ৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি ঢুকেছে।
কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, পানি কিছুটা কমে আবার বাড়তে শুরু করেছে। খারনৈ ইউপির চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুল হক ভূঁইয়া বলেন, বন্যার পানিতে রাজনগর, বালুচড়া, বাউসাম, চৌতানগর, তাড়ানগর, ঘোড়াগাঁওসহ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট স্থানে স্থানে ভেঙে চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। পানি কমে আবার বেড়ে যাওয়ায় মেরামতও করা যাচ্ছে না।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার পানি কিছুটা কমে এখন আবার বাড়ছে, তবে কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি। বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।