উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আরও এক রোহিঙ্গা তরুণ নিহত
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী এলাকার বালুখালী (ক্যাম্প-১০) রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুর্বৃত্তের গুলিতে আরও এক রোহিঙ্গা তরুণ নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। চলতি মাসে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলায় কয়েকটি আশ্রয়শিবিরে এক মেয়ে শিশুসহ চার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
নিহত তরুণের নাম মোহাম্মদ জসিম (২৫)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের ১৬–এফ ব্লকের মৃত আবদুল গফুরের ছেলে। পুলিশ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উখিয়ায় কুতুপালং (ক্যাম্প-২-পশ্চিম) আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে মোহাম্মদ সালাম (৩০) নামে আরেক রোহিঙ্গা যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকের রশিদ আহমদের ছেলে। গুলিবিদ্ধ সালাম বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প–১০) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, আজ বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বালুখালী (ক্যাম্প-১০) আশ্রয়শিবিরে ১৬-এফ ব্লকের ঘর থেকে ডেকে মোহাম্মদ জসিমকে পাশের রাস্তায় নিয়ে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এরপর গুলি চালিয়ে তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জসিমকে উদ্ধার করে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু কী কারণে তাঁকে (জসিম) হত্যা করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
নিহত যুবকের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পাঁচ-ছয়জনের একটি রোহিঙ্গা দল জসিমের ঘরে যায় এবং জরুরি কথা বলে তাঁকে ঘর থেকে ডেকে পাশের সড়কে নিয়ে যায়। এরপর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে আশপাশের রোহিঙ্গারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জসিমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছটফট করতে দেখেন। এরপর গুলিবিদ্ধ জসিমকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সকালে পুলিশ এমএসএফ হাসপাতাল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত উখিয়ার বালুখালী, তাসনিমারখোলা, ময়নারঘোনার আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও কুপিয়ে এক মেয়ে শিশুসহ চার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এক গৃহবধূসহ পাঁচ রোহিঙ্গা।
এপিবিএন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, আশ্রয়শিবিরে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।