পটুয়াখালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় ২২৫ জনকে আসামি করে মামলা
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় গতকাল শুক্রবার বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এতে ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের সহসভাপতি আকবর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে ছাত্রদলের কর্মী রনি ও তাইজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে পুলিশ তিনজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার–আতঙ্কে আছেন।
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুরে দশমিনা উপজেলা শহরের পূজাখলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, তাঁদের মিছিলটি দশমিনা আদালতের সামনে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান। বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি সামনে এগিয়ে নিয়ে যান দলের নেতা-কর্মীরা। তবে মিছিলটি পূজাখলা এলাকায় পৌঁছাতেই পুলিশ পেছনের দিক থেকে এসে মিছিলে লাঠিপেটা করে। এতে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী আহত হন।
পুলিশ বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে।
তবে দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মিছিল নিয়ে এসে বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী পূজাখলা এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে দশমিনা উপজেলার সঙ্গে বাউফল উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন কনস্টেবল জাকির ও সিবাতুর রহমান আহত হয়ে দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। হামলাকারীরা পুলিশের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় এলাকার একটি চায়ের দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি কাজে বাধা, মারামারি, সাধারণ মানুষের ক্ষতিসাধন, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরসহ এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে মামলার আসামিদের নাম তিনি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁদের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করলে অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। বিনা উসকানিতে পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে। এখন মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বাসাবাড়িতে থাকতে পারছেন না নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার পর তাঁদের নেতা-কর্মীদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে জানান তিনি।