সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান, গ্রেপ্তার ১২
দেশে চলমান কারফিউর মধ্যেও সিলেটে ভারতীয় চিনি চোরাচালান থেমে নেই। পাঁচ দিনে পুলিশের অভিযানে অন্তত ২৯ টন ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। চোরাচালানে সম্পৃক্ততার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২ জন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ থেকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে ৫টি অভিযানে চালানগুলো জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। মামলায় ওই ১২ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার উত্তর ইসলামপুর গ্রামের সোহবুল ইসলাম (৩৬), একই জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ গ্রামের শামীম আহমদ (৩৫), চাঁদপুরের কচুয়া থানার তেগুরিয়া গ্রামের হাসান পাঠান (৩৫), নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সালুন্দি গ্রামের আরমান আলী (১৮), সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাতেরটেক গ্রামের জাকির হোসেন (২৫), সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব আলীরগাঁও গ্রামের শাহিন আহমদ (২২), উপর দুমকা গ্রামের মো. মঞ্জুরুল (৩০) ও পরবল্লি গ্রামের নিজাম উদ্দিন (৩০), জৈন্তাপুরের সারিঘাট গ্রামের কামাল আহমেদ (২২), জালালাবাদ থানার মেঘারগাঁওয়ের হাবিব মিয়া (২৪), বড়ফৌদ গ্রামের খালেদ আহমেদ (১৯) ও কোম্পানীগঞ্জের গৌরীনগর গ্রামের মিজানুর রহমান (৩০)।
সিলেট জেলার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, চোরাচালান রোধে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুধিসমাজ ও সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অপরাধ নির্মূলে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, ২৩ জুলাই ভোরে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মণাবন্দ ইউনিয়নের লক্ষ্মণাবন্দ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা বাজার যাত্রীছাউনির সামনে থেকে একটি ট্রাক জব্দ করে পুলিশ। ট্রাকে ৩৫৯ বস্তা ভারতীয় চিনি ছিল। চোরাই চিনিগুলো ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট আনা হয়েছিল। এ সময় দুজনকে আটক করা হয়। ২৫ জুলাই ভোরে গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মামার বাজার একটি পিকআপ থেকে ৫০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজন আটক হন। একই দিন রাতে গোয়াইনঘাটের পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর গ্রামে সারি নদীতে একটি নৌকা থেকে ৭৫ বস্তা চিনি জব্দ করে পুলিশ। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ২৬ জুলাই রাতে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের জৈন্তাবাজারে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে একটি পিকআপ থেকে ৬০ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দের পাশাপাশি একজনকে আটক করে পুলিশ। এরপর ২৭ জুলাই রাত সাড়ে তিনটার দিকে কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের খাগাইল সাকিন গ্রামের ইউসুফ আলী পেট্রলপাম্পের পাশ থেকে একটি পিকআপে তল্লাশি চালিয়ে ৪০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে পুলিশ। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কারফিউ থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সুযোগে অনেক চোরাকারবারি ভারত থেকে চোরাই পণ্য আনছেন। সুযোগ বুঝে সেগুলো বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সামান্য কিছু ধরা পড়ছে।