সীমান্তে বিজিবি সদস্যকে হত্যার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ
যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বিজিবির সিপাহি রইশুদ্দীনকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে শহরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির যশোর জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তসলিম উর রহমান; বাম গণতান্ত্রিক জোটের জেলা সমন্বয়ক জিল্লুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন। কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে রইশুদ্দীন হত্যার ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য আশা করা হয়। একই সঙ্গে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, আগেও তাঁরা দেখেছেন, তাঁদের মেয়ে ফেলানিকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল বিএসএফ। এবার দেখা গেল, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হলো। এটা কি ভারতের বন্ধুত্বের নমুনা? এমন বন্ধুত্ব তাঁরা চান না।
বক্তারা আরও বলেন, বাণিজ্য, পানিবণ্টন ও আকাশ–সংস্কৃতিতে ভারত বাংলাদেশকে শোষণ করছে। বাংলাদেশের সড়ক, বন্দর ও মাটি তারা ব্যবহার করছে। অথচ বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছে না। এ দেশের টেলিভিশন চ্যানেল ভারতে দেখানো হয় না। ভারতে ট্রানজিটের সুযোগ বাংলাদেশ পায় না। অথচ ভারত এ দেশের রাজনীতিতে সকাল-বিকেল নাক গলায়। বর্তমান সরকারের ভারতের গোলামি দেশবাসী মেনে নেবে না বলেও বিক্ষোভ সমাবেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত সোমবার ভোরে ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট-সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিকে সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখে বিজিবির টহল দল। এ সময় টহল দলের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিজিবির সিপাহি মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারিদের পেছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশায় দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাঁকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের ভেতরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর দুই দিন পর গতকাল বুধবার সকালে বিএসএফ লাশ হস্তান্তর করে।
বিজিবির যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার পরপরই বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়, ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সৈনিক মারা যান। এ বিষয়ে বিএসএফকে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছে।