পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, কৃষক লীগ নেত্রীসহ কারাগারে ১৬
খুলনায় শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক হালিমা রহমানসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুজগুন্নি বাস্তুহারা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই হামলার ঘটনায় নয়জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চারজন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
খালিশপুর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের ধরতে মুজগুন্নি বাস্তুহারা এলাকায় হালিমা রহমানের বাসায় অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পেয়ে আটকও করা হয়। কিন্তু তাঁদের পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালান হালিমাসহ বেশ কয়েকজন। এ সময় আহত হন পুলিশের নয়জন সদস্য। অন্যদিকে পালিয়ে যান মামলার অন্যতম আসামি পলাশ। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি হালিমার বাসার সামনে বসে ছিলেন। পুলিশের গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাসার ভেতরে ঢুকে পড়েন। আমরা ভেতরে ঢুকতে চাইলে দারোয়ান বাধা দিয়ে খারাপ আচরণ করেন। একপর্যায়ে আমরা লিফট দিয়ে আটতলায় ওঠার চেষ্টা করলে পাঁচতলা পর্যন্ত ওঠার পর আমাদের লিফট বন্ধ করে দেন তাঁরা। পরে মিস্ত্রি এসে জানান লিফট নষ্ট হয়নি। ওপর থেকে সুইচ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হালিমা, স্নেহা নামের তৃতীয় লিঙ্গের এক ব্যক্তি ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা মিলে আমাদের অবরুদ্ধ করে ফেলেন। একপর্যায়ে আসামি পলাশকে ছিনিয়ে নেন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।খালিশপুর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন
ওসি আরও জানান, এরপর শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা মামলার তিন আসামিকে আমরা ধরে ফেলি। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হালিমা, স্নেহা নামের তৃতীয় লিঙ্গের এক ব্যক্তি ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা মিলে আমাদের অবরুদ্ধ করে ফেলেন। একপর্যায়ে আসামি পলাশকে ছিনিয়ে নেন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।’
এ ঘটনায় পুলিশ হালিমা ও তাঁর ১৫ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান ওসি। তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যে ইয়াসিন ও মিনার নামের দুজন শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি আছেন। পুলিশের কাজে বাধা ও হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগে ওই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।