বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেছেন, ৫০ বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে। বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষের উন্নত স্যানিটেশন–ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশে অনেক প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছে। আগামী দিনগুলোতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি এলাকায় রাজিয়া স্যানিটারি কারখানা পরিদর্শন এবং পরে উপজেলা স্যানিটারি ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মাসিক সভায় উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড এসব কথা বলেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত ওই ব্যবসায়ী সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রশংসা করেন।
গতকাল দুপুরে নাথালি চুয়ার্ড ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট চরামদ্দি ইউনিয়নের মিয়াবাড়ি বাজার–সংলগ্ন রাজিয়া স্যানিটারি কারখানা পরিদর্শনে আসেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত ও অন্য অতিথিরা ওই কারখানার মালিক মোসা. রাজিয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলেন। পরে নাথালি চুয়ার্ড ও শেলডন ইয়েট রাজিয়া স্যানিটারির তৈরি স্যানিটেশন মালামাল ও উৎপাদন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুইজারল্যান্ড সরকার ও ইউনিসেফের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ সরকারের অংশীদারত্বে ২০১৯ সালে ‘স্কেলিং আপ স্যানিটেশন মার্কেট সিস্টেমস’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজেস (আইডিই) বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল, ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের ৭০ হাজার পরিবারের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যবহার নিশ্চিত করা, উন্নত স্যানিটেশনসেবার চাহিদা ও ব্যবহার বৃদ্ধি করা, সরকারি ও বেসরকারি খাতের সেবাদানকারীদের মাধ্যমে বর্তমান সেবা কর্মসূচির উন্নতি করা এবং ওয়াশ সেক্টরের সঙ্গে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।
উদ্যোক্তারা জানান, রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড ও ইউনিসেফ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েটের এ সফরের উদ্দেশ্য হলো, প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বর্তমান অবস্থা, বিশেষ করে স্যানিটারি কারখানার মালিক এবং তাঁদের সমবায় সমিতির মাধ্যমে গ্রামীণ পর্যায়ে কীভাবে উন্নত স্যানিটেশনসেবা দেওয়া হচ্ছে, তা সরেজিমন দেখা।
এদিকে উপজেলা স্যানিটারি ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নাথালি চুয়ার্ড ও শেলডন ইয়েট বলেন, যুগোপযোগী স্যানিটেশন প্রযুক্তির ব্যবহার ও একই সঙ্গে স্যানিটেশন ব্যবসায়ীদের একই ছাতার নিচে আনার জন্য স্থানীয় ব্যক্তিদের আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
এ সময় ইউনিসেফ বরিশালের অফিসপ্রধান এ এইচ তৌফিক আহমেদ, ওয়াশ অফিসার ফোরকান আহমেদ, আইডিই বাংলাদেশের ফিল্ড টিম লিডার মো. নূরুল ইসলাম, চরামদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা ও আরএফএলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।