সৈয়দপুরে ঈদে মিলাদুন্নবীতে শত শত মানুষ, আনন্দ শোভাযাত্রা
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুস পালিত হয়েছে। এতে শত শত মানুষ অংশ নেন। এ সময় ‘আজকে মোদের খুশির দিন, বিশ্বনবীর জন্মদিন’, ‘বিশ্বনবীর আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে পড়ে গোটা সৈয়দপুর।
আজ বৃহস্পতিবার আঞ্জুমানে গাউসিয়া আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের তত্ত্বাবধানে বিরাট এই জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন পীরে কামেল সৈয়্যদ জামাল আশরাফ আশরাফী আল জিলানী। আনন্দ শোভাযাত্রাটি শহরের রেলওয়ে মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বিভিন্ন পাড়ামহল্লা, খানকাহ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় সংগঠনের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল রেলওয়ে মাঠে এসে জমায়েত হয়। প্রত্যেকের হাতে শোভা পাচ্ছিল কালেমাখচিত সবুজ পতাকা। বিভিন্ন সাজে সজ্জিত করা হয় শতাধিক যানবাহন।
মিছিল শেষে রেলওয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদে মোস্তাফা। এতে বক্তব্য দেন ঐতিহাসিক চিনি মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শাহীদ রেজা রিজভী, খলিফা মেরাজ রাসুল কাদেরী, মাওলানা মিসবাহী আশরাফী, মাওলানা ইমরান হাবিব আশরাফী, মাওলানা মঈনুল ইসলাম কাদেরী মাওলানা রিদওয়ান কাদেরী প্রমুখ। এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হিটলার চৌধুরী, শিল্পপতি সিদ্দিকুল আলম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমানে গাউসিয়া আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সভাপতি আলহাজ নুরুদ্দিন আশরাফী।
উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পীর মাশায়েখ, উলেমায়ে কেরাম, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, স্থানীয় রাজনীতিবিদসহ মিলাদুন্নবীর আশেকরা। বিরাট এই জুলুসকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
এই জশনে জুলুস এক নজর দেখার জন্য আশপাশের শহর থেকেও বিপুলসংখ্যক মানুষ জড়ো হন সৈয়দপুরের প্রধান প্রধান সড়ক ও রেলওয়ে ময়দানে। এতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আলা হজরত ইমাম আহমাদ রেজা ফাউন্ডেশন, আঞ্জুমানে আশরাফিয়া, ফায়জানে তেগিয়া ফায়জানে ইমাম আজম আবু হানিফা কমিটি, গাউসিয়া কমিটি, রেজা একাডেমি, নুর নাত কাউন্সিল, আশিকানে আউলিয়া কমিটি গোলাহাট, দাওয়াতে ইসলামী, নওজয়ানে আহলে সুন্নাত, ফয়জানে মাখদুম আশরাফসহ শতাধিক সুফিবাদী সংগঠন অংশ নেয়। ফলে নিমেষেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় গোটা সৈয়দপুর শহর।
আলোচনা সভায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করায় সরকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বক্তারা। পরে সালাতো সালাম এবং সবশেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম এই মিলাদুন্নবীর আয়োজন।
উল্লেখ্য, ঈদে মিলাদুন্নবীর চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে পুরো শহরে নির্মাণ করা হয় বড় বড় তোরণ। মসজিদ–মাদ্রাসা ও পাড়ামহল্লায় করা হয় বিশেষ আলোকসজ্জা। শহরের প্রতিটি মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।