কুষ্টিয়ায় বিদ্যালয়ে হঠাৎ ছুটির আদেশে বিপাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
তীব্র শীতের কারণে আজ মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে এই আদেশ না জানার কারণে বিপাকে পড়ে। বেশির ভাগ স্কুলে শিক্ষার্থীরা তীব্র ঠান্ডার মধ্যে পৌঁছে যায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল আটটার দিকে তাঁরা প্রতিটি উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠদান বন্ধের বার্তা মুঠোফোনে পৌঁছে দেন। তাঁরা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে স্কুলপ্রধানদের কাছে বার্তা পৌঁছান।
কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টায় কুষ্টিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টার দিকে ঝলমলে রোদ ওঠে, তাপমাত্রা একটু বাড়ে। এর আগে গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
সকাল নয়টার পর স্কুল বন্ধের বিষয়টি ধীরে ধীরে অভিভাবকেরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পারেন। ততক্ষণে ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁরা স্কুলে চলে আসেন। শিক্ষা কর্মকর্তাদের এই সিদ্ধান্তকে দায়সারা হিসেবে দেখছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। আগের দিনের আবহাওয়া ও পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণ না করে হঠাৎ সিদ্ধান্তের এই ছুটি নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
অভিভাবকেরা বলছেন, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়ার পর জানতে পারে, শীতের কারণে আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আবার অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্য অভিভাবকদের ফোন পেয়ে জানতে পেরেছেন।
এদিকে সকাল ১০টা ৯ মিনিটে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত দুটো অফিস আদেশ পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আবহাওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলো। আবহাওয়া স্বাভাবিক (১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ থাকবে।
আফসানা শারমিন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘সকালে উঠে বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। সে সময় ৮টা ২৩ মিনিটে মুঠোফোনে স্কুল থেকে খুদে বার্তা পাই, আজ শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, স্কুলে তাঁর সন্তানকে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি চলে আসেন। পরে জানতে পারেন স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শীতের মধ্যে আবার স্কুলে গিয়ে সন্তানকে নিয়ে আসেন। এটাকে তিনি শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীন ও সমন্বয়হীনতা বলছেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি দেরিতে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে দুই শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হবে যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।’