পলাশে হামলা-ভাঙচুরের জেরে জনতা পাটকল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

নরসিংদীর পলাশে জনতা জুটমিলস লিমিটেড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সকালে
ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর পলাশে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের পর জনতা জুটমিল লিমিটেড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে পাটকলটির প্রধান ফটকে এ-সংক্রান্ত নোটিশ টাঙিয়ে দেয় মিল কর্তৃপক্ষ। পাটকলটিতে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৪ দফা দাবিতে মালিকপক্ষের সঙ্গে সভা শেষে শ্রমিকদের একাংশ পাটকলটির প্রশাসনিক ভবন, লেবার অফিস, নিরাপত্তা কার্যালয় ও গেস্টহাউসে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ ছাড়া শ্রমিকদের মজুরির প্রায় ৫০ লাখ টাকা লুট করেন তাঁরা। বাধা দিতে গিয়ে ৬ জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। খবর পেয়ে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নরসিংদীর পলাশের বাগপাড়ায় অবস্থিত এ পাটকলটি আকিজ-বশির গ্রুপের মালিকানাধীন। পাটকলটির মহাব্যবস্থাপক মো. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, জনতা জুট মিলস লিমিটেডে ৩ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সময়ে কিছুসংখ্যক দুষ্কৃতকারী প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বেআইনি ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ভাঙচুরে লিপ্ত ছিলেন। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সব উৎপাদন কার্যক্রম আজ থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মিল বন্ধকালীন সময়ের শ্রম আইন এবং শ্রম বিধিমালা মোতাবেক শ্রমিকেরা মজুরি পাবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব শ্রমিককে কর্মক্ষেত্রে যোগদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুনরায় চালু করার সুনির্দিষ্ট তারিখ না জানিয়ে মিল বন্ধ ঘোষণা করায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বন্ধ ঘোষণার পর থেকে মিলের কলোনি ছাড়ছেন বসবাসরত হাজারো শ্রমিক। এদিকে মিলে এখনো অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে।

একজন নারী শ্রমিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০ বছর ধরে এই মিলে কাজ করেন। উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় আজ তাঁদের মিল ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। এর চেয়ে কষ্টের কিছু নেই। পরিবারের পাঁচজন সদস্য নিয়ে এখন কীভাবে চলবেন, তাই বুঝতে পারছেন না তিনি।

জানতে চাইলে পাটকলটির মহাব্যবস্থাপক মতিউর রহমান জানান, কবে নাগাদ মিলের উৎপাদন চালু করা হবে, তা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে পাটকল কর্তৃপক্ষ।