ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের সভা থেকে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্যকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেত্রী রোমা আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। গতকাল শনিবার রাতে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র সহকারী জজ মাহাম্মদ রেজাউল হক এই নোটিশ দেন।
রোমা আক্তার নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আজ রোববার বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁকে সশরীর হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নোটিশে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহ জাহান মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন। এই আসনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ একরামুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরের নাসিরপুর বাজারে একরামুজ্জামানের নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন রোমা আক্তার। তিনি নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেনকে আগামী ৭ জানুয়ারির পর নাসিরনগরের মাটিতে আর পা রাখতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। যার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সভায় রোমা আক্তার বলেন, ‘তিনি (ফরহাদ হোসেন) নাসিরনগরে এসেছেন প্রবীণ নেতাদের নাম মুছে ফেলার জন্য। নাম মুছে ফেলা এত সহজ নয়। আপনাকে নাসিরনগরের মাটিতে ৭ তারিখের পরে আর পা রাখতে দিব না, ইনশা আল্লাহ।’
এ ধরনের বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২–এর (৭১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮–এর ১১ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য কেন রোমা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করা হবে না তার ব্যাখ্যা চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে এই ব্যাখ্যা দিতে হবে।
রোমা আক্তার ও তাঁর স্বামী কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক নাজির মিয়া এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি)। এই আসনে চারজন প্রার্থী রয়েছেন। মূলত নৌকার সঙ্গে কলার ছড়ি প্রতীকের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।