টাঙ্গাইলের বাসাইল থেকে সখীপুরে এসে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে খাসজমি দখলের চেষ্টা, ভ্রাম্যমাণ আদালতকে বাধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ১৫ দিনের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন আদালত। এতে সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা লজ্জিত ও বিব্রত বোধ করছেন। দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার দায়ে ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারেরও দাবি জানিয়েছেন দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারা।
সাজা পাওয়া ওই নেতার নাম মোস্তফা খান ওরফে রাজিব (৪০)। তিনি বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর বাড়ি বাসাইল গ্রামে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার প্রতিমাবংকী মৌজার কলাবাগান এলাকার ১ নম্বর সরকারি খাসখতিয়ানভুক্ত জমিতে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মোস্তফা খান নামের ওই আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে আসা শতাধিক লোক জমি দখলের উদ্দেশ্যে ঘর নির্মাণ করছিলেন। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সুলতানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর নির্মাণে বাধা দেন। আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা খান উল্টো আদালতের কাজে বাধা ও আদালতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে আদালত পুলিশের সহযোগিতায় ওই নেতাকে আটক করে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, প্রতিমাবংকী মৌজার ৯১ দাগে ওই নেতার কোনো জমি নেই। বাসাইল উপজেলার শুন্না গ্রামের এক ব্যক্তির পক্ষে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে ওই জমি দখলের চুক্তিতে এসেছিলেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, মোস্তফা খান নামের ওই নেতার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে জমি দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে মনে করে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান স্থানীয় নেতারা।
সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসাইল থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সখীপুর এসে খাসজমি দখলের চেষ্টা করায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা বিব্রত হয়েছি। ওই সন্ত্রাসীকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করছি।’
বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান আজ শনিবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কোনো সন্ত্রাসীর জায়গা দলে নেই। কারাগার থেকে বের হয়ে আসার পর তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পাওয়া ওই নেতাকে গত শুক্রবারই টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, সাজা পাওয়া ওই ব্যক্তির নেতৃত্বে শতাধিক লোক ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে বাধা দেন। এ ছাড়া তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।