হবিগঞ্জে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন থাকায় বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগ
হবিগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন কেন্দ্র করে আজ শনিবার জেলায় সব ধরনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ আছে। পরিবহনশ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। সম্মেলন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ থাকলেও পরিবহন–সংকটে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না।
দুপুরে হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, হবিগঞ্জ-ঢাকা ও হবিগঞ্জ-সিলেট রুটে চলাচলকারী সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ আছে। বাসগুলো টার্মিনালের সামনে সারি সারি দাঁড়ানো। আজ ভোরে টার্মিনাল থেকে কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। পাশাপাশি প্রাইভেট মাইক্রোবাস ও কার চলাচল বন্ধ ছিল।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন আজ। নির্বাচন ঘিরে শ্রমিকেরা যান চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
বাস টার্মিনালের সামনে দুপুর ১২টার দিকে বাসের জন্য অপেক্ষায় বসেছিলেন জগদীশ সূত্রধর (৬৫) ও নির্মলা রানী (৫৫) নামের দুজন বয়স্ক যাত্রী। বসে থাকার কারণ জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, সকালে বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষণপাড়া থেকে সিলেট যাওয়ার জন্য এসেছিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে জানলেন, আজ কোনো বাস চলবে না। এখন কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না।
ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে আজমিরীগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে টার্মিনালে আসেন মনোয়ার হোসেন (৬৫)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ ঢাকার একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসকের সময় নেওয়া আছে। কিন্তু কীভাবে যাবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে নির্বাচন করার ব্যাপারে আমরা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা কথা রাখেননি।’
এ বিষয়ে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সজিব আলী প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়নি। তাঁরা দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে এলাকাবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনের কারণে ওই দিন (আজ) সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
আজ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত শহরের জে কে অ্যান্ড এইচ কে হাইস্কুলে জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। এবারের নির্বাচনে ২০ পদের মধ্যে ১৮টিতে ২ হাজার ৩৫৪ জন ভোটার সরাসরি ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নেতা নির্বাচন করবেন। সভাপতি পদে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। পাশাপাশি সহসাধারণ সম্পাদকের একটি পদে নির্বাচন হচ্ছে না। বাকি ১৮টি পদে নির্বাচন হচ্ছে।