বন্যায় হাকালুকি হাওরপারের দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

বন্যাকবলিত মৌলভীবাজারের বড়লেখার গগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরপারের প্রায় গ্রামে এখনো পানি। পানিতে ডুবে আছে গ্রামীণ পথঘাট। একই অবস্থা বন্যাকবলিত গ্রামের বিদ্যালয়গুলোর। বিদ্যালয়গুলোর সংযোগ সড়ক ডুবে আছে হাঁটু ও কোমরসমান পানিতে। পানি ঢুকেছে বিদ্যালয়ের ভবনগুলোয়ও। কোনো ভবনের বারান্দা পানিতে ডুবেছে। কোনো ভবনের শ্রেণিকক্ষে ঢুকেছে পানি। বিদ্যালয়ের চারপাশ ও মাঠে পানি ঢেউ খেলছে। এর মধ্যে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরপারের বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ীতেই বন্যায় বেশির ভাগ স্কুল বন্ধ হয়েছে। সারা জেলায় আজ রোববার পর্যন্ত মাধ্যমিকে ৩৬টি ও প্রাথমিকে ১৯৫টি বিদ্যালয় বন্ধ আছে। এর মধ্যে বড়লেখা উপজেলায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের এ রকম ৭২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলেছে গত ২৬ জুন এবং ৩ জুলাই খুলেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। বিদ্যালয়গুলো খুললেও হাকালুকি হাওরপারের বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানের পরিবেশ ও পরিস্থিতি নেই। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে এসব বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়ে আছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী আসার ও পাঠদানের সুযোগ নেই।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, পানি নামছে না। অনেক সময় ধরে বন্যা চলছে। সারা জেলায় ৩৬টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম বন্ধ। এর মধ্যে বড়লেখাতেই বেশি। তবে জুড়ী ও কুলাউড়ার কিছু বিদ্যালয় ১৮ জুলাই খুলতে পারে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম জানান, সারা জেলায় ১২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যাকবলিত এবং ৭৩টিতে আশ্রয়কেন্দ্র। এগুলো বন্ধ আছে। হাকালুকি হাওরপারের বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়াতেই বন্ধ স্কুল বেশি।

বড়লেখা উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরে পানি বেড়ে হাওরপারের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যায়। অনেকের ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, পরিচিতজন ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। চলাচলের ক্ষেত্রে এখন নৌকাই প্রধান মাধ্যম।

হাকালুকি হাওরপারের দক্ষিণ বাগীরপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা (শিক্ষক-শিক্ষিকা) স্কুলে আছি। পানি ভবন থেকে নেমেছে। কিন্তু শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর অবস্থা নেই। পানি আর না বাড়লে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে আরও কয়েক দিন লাগবে।’