মনিরামপুরে প্রতিমন্ত্রী স্বপনের বিরুদ্ধে পূজা উদ্‌যাপনে ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ

প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের বিরুদ্ধে পূজা উদযাপনে ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রীতা রানী পাড়ের সংবাদ সম্মেলন। সোমবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের বিরুদ্ধে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হাজিরহাট মন্দিরে পূজা উদ্‌যাপনে ব্যাঘাত ঘটনার অভিযোগ করেছেন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং হাজিরহাট মন্দির ও সর্বজনীন দুর্গাপূজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রীতা রানী পাড়ে।

আজ সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় দুর্গাপূজা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিয় কান্তি রায় উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে রীতা রানী পাড়ে বলেন, উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের সনাতনী–অধ্যুষিত হাজিরহাট বাজারে প্রতিবছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপিত হয়। গত ২৬ জুলাই ওই এলাকার ছয় গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে দুর্গাপূজা পরিচালনা কমিটি গঠন করতে সভা করা হয়। ওই সভায় আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সভায় উপস্থিত ব্যক্তিরা তাঁকে (রীতা রানী) সভাপতি ও অমিয় কান্তি রায়কে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ওই সভায় হামলা করেন আগের কমিটির হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তিসহ বহিরাগত ব্যক্তিরা।

রীতা রানী বলেন, গত কয়েক বছরের পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা কমিটি গঠনের সভায় বর্তমান কমিটিকে সমর্থন করেন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের সমর্থক ও ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিরা জেলা ও উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতাদের সহায়তায় নানা ষড়যন্ত্র করছেন, যাতে তাঁদের পূজা পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য
ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা আওয়ামী লীগের এই নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে হাজিরহাট বাজারে প্রতিমন্ত্রীর মদদে তাঁর ক্যাডারখ্যাত স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন অবস্থান নেন। সঙ্গে শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়ে আসা হয়। তাঁরা সনাতন সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে শুধু প্রতিমন্ত্রীর ইচ্ছা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন। রাত ১০টার দিকে একজন সহকারী পুলিশ সুপার ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন। এরপর হঠাৎ পুলিশ লাঠিপেটা করে পূজা উদ্‌যাপন কমিটির লোকজনকে বের করে দেয়। এ সময় হরিদাসকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপদ ভঞ্জন পাড়েকে জিম্মি করে তাঁর স্ত্রীর (রীতা রানী) কাছ থেকে মন্দির ও পূজা পরিচালনায় ব্যবহৃত কার্যালয়ের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রথম আলোকে বলেন, পূজা উদ্‌যাপন কমিটি গঠন নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে তাঁরা এখন রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পূজা পরিচালনা কমিটি গঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। পূজা কীভাবে উদ্‌যাপন করা হবে, সেটা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও কমিটির ব্যাপার। এতে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসেন বলেন, পূজা উদ্‌যাপন কমটির দুই পক্ষ সেদিন হাজিরহাট বাজারে অবস্থান নিয়েছিল। এ ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার চেষ্টা করেছে পুলিশ।