দুমকিতে হাত–পা বেঁধে আগুন দেওয়া গৃহবধূর মৃত্যু, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালীর দুমকিতে হাত–পা বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ মা ও ছেলের মধ্যে মা মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূ মারা গেছেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম হালিমা আক্তার (২০)। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দুমকি উপজেলার নতুন বাজারসংলগ্ন শাহজাহান মুন্সির ভাড়াবাড়ি থেকে হালিমা ও তাঁর পাঁচ মাসের ছেলে জিসানকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেন এলাকাবাসী।

উদ্ধারের পর হালিমা আক্তার ও তাঁর ছেলে জিসানকে প্রথমে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়। ঘটনার সময় হালিমা আক্তারের স্বামী জামাল হোসেন বাড়িতে ছিলেন না। পরে তিনি খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে যান। তিনি গতকাল ঢাকা থেকে হালিমার মৃত্যুর বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও প্রতিবেশীরা জানায়, জামাল হোসেন ও হালিমা আক্তার দম্পতির বাড়ি দুমকির আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের সাতানি গ্রামে। ২ জুন এ দম্পতি দুমকি উপজেলা শহরে নতুন বাজার এলাকায় শাহজাহান মুন্সির বাড়িতে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ওঠেন। ওই বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা বৃহস্পতিবার দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

বেলা তিনটার দিকে হঠাৎ হালিমা আক্তারের ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ পান। পরে তাঁরা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শাড়ি ও ওড়না দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হালিমা আক্তারকে উদ্ধার করেন। এ সময় তাঁর শিশুপুত্রের হাতসহ বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসানো ছিল। প্রতিবেশীরা দুজনকে দ্রুত বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার আগে বোরকা পরা অবস্থায় দুজনকে গৃহবধূর ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা বোরকা পরে ঘরে ঢুকে হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে হালিমা আক্তারের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘরের বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ করে যায়।

এ ঘটনায় হালিমা আক্তারের মামা ওমর ফারুক বাদী হয়ে দুমকি থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় নিহত গৃহবধূর শাশুড়ি পিয়ারা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ শাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত হালিমার স্বামী জামাল হোসেনের বরাত দিয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান, তাঁদের পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ জন্য কিছুদিন আগে ঘর ভাড়া করে আলাদা থাকা শুরু করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।