রাজশাহীতে বিএনএমের নেতারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা
রাজশাহীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) কার্যালয় আছে, আছে কমিটিও। এই নতুন দলের নেতারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে এসেছেন। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার পথে থাকা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) সম্পর্কে রাজশাহীতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাদের সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
রাজশাহী শহরের শিরোইল এলাকায় বিএনএমের কার্যালয় অবস্থিত। ৩১ সদস্যের জেলা কমিটির সদস্যসচিব মো. শরিফুল ইসলাম। তিনি একটি স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ। আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর দাবি, রাজশাহী জেলার সব কটি উপজেলায় তাদের কার্যালয় আছে, কমিটিও আছে।
কমিটির বেশির ভাগ নেতাই আওয়ামী লীগ থেকে আসা—এ ব্যাপারে শরিফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগে বঞ্চিত হওয়ার কারণেই তাঁরা নতুন দলে যোগ দিয়েছেন। তবে নতুন এই দলের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেছেন, আওয়ামী লীগের সুবিধার জন্য তাঁরা এই দল খুলেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বাগমারা উপজেলা বিএনএমের কার্যালয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সঙ্গে লাগোয়া। চারঘাট উপজেলা কার্যালয়টি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে। তানোর উপজেলা কার্যালয়টি মূলত একটি কফি হাউস। সেটির একাংশ ভাড়া নিয়ে দুই মাস হলো বিএনএমের কার্যালয় খোলা হয়েছে।
বিএনএমের তানোর উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩১ সদস্যের কমিটির সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ছিলেন। সভাপতি মমিনুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, তাঁদের কমিটির সবাই আওয়ামী লীগে ছিলেন।
চারঘাটে বিএনএমের কার্যালয় আছে। এখানে জাতীয় পার্টির নেতারা মিলে কমিটি গঠন করেছেন। সভাপতি হয়েছেন গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইমরান আলী এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন চারঘাট উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রায়হান। এই নতুন দলে জাতীয় পার্টির চারঘাট উপজেলার সভাপতি রমজান আলী উপদেষ্টা হয়েছেন।
বাগমারা উপজেলা কার্যালয়টি খোলা হয়েছে উপজেলার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশের ছোট্ট ঘরটিতে আগে যুবলীগের নেতারা বসতেন। তার ওপরই বিএনএমের ব্যানার লাগানো হয়েছে। গত রোজার সময় থেকে স্থানীয় লোকজন ব্যানারটি দেখছেন।
বাগমারা উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন আবদুর রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, এই নতুন দলের বাগমারা উপজেলা কমিটির সিংহভাগই আওয়ামী লীগ থেকে আসা।
তবে জেলা পর্যায়ে বা জেলার কোনো উপজেলায় বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) কোনো কমিটি বা কার্যালয়ের কথা কেউ বলতে পারছেন না। জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি কয়েকটি উপজেলায় বিএনএমের সাইনবোর্ড দেখেছেন। কিন্তু বিএসপির কোনো সাইনবোর্ড তাঁর চোখে পড়েনি।