বানভাসিদের সহায়তায় গান, গলা মেলালেন পথচারীরা
সড়কের পাশে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গাইছিলেন একদল সংস্কৃতিকর্মী। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলালেন পথচারীরা। সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে কাগজের বাক্স হাতে অর্থ সংগ্রহ করছিলেন কয়েক তরুণ। পথচারীরা সাধ্যমতো তাঁদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরে আজ মঙ্গলবার এভাবে রাস্তায় গান গেয়ে বন্যার্ত মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন স্থানীয় একদল সংস্কৃতিকর্মী। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ভবানীগঞ্জ বাজার চৌমোহনায় অর্থ সংগ্রহ চলে।
সরেজমিন দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ জন সংস্কৃতিকর্মী পালাক্রমে গান গাইছেন। কেউ ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’, কেউ ‘আমি মানব ধর্মে মানব কর্মে সপিনু এ প্রাণ-মন’ আবার কেউ ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো, শুন বলি রে পাগল মন’ গান পরিবেশন করেন। কয়েকজনের হাতে প্ল্যাকার্ডে ‘মানুষ ভাসে বন্যায়, নীরব থাকা অন্যায়’, ‘বল কী তোমার ক্ষতি, জীবনের অথই নদী, পার হয় তোমাকে ধরে দুর্বল মানুষ যদি’ এমন নানা কথা লেখা। গান শুনে ভিড় জমান নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাঁদের কেউ কেউ সংস্কৃতিকর্মীদের গানে সুর মেলান।
রহিমা খাতুন নামের এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তা দিয়া আইতে দেখলাম, বন্যায় কষ্টে পড়া মানুষরে রিলিফর লাগি ছেলেমেয়েরা গান গাইছে, রাস্তায় দাঁড়াইয়া সাহায্য তুলছে। কিছু সহযোগিতা করছি।’
কাতারপ্রবাসী সাইদুল হাসান বলেন, ‘তরুণেরা যেন জেগে উঠছে। এইটা আমারারে আশা জাগায়। মানুষ তো মানুষের পাশেই দাঁড়াবে।’ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বিল্লাহ আহমদ বলেন, ‘দেশের নানা জায়গায় বন্যায় মানুষ খুব কষ্টে আছে। সামান্য টাকা দিয়া এইখানে সহযোগিতা করছি।’
কর্মসূচির প্রধান উদ্যোক্তা সংস্কৃতিকর্মী শিক্ষার্থী মৃদুল ঘোষ। আলাপচারিতায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েকজন মিলে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করি। পরে এ উদ্যোগ নিই। বেশ সাড়া পাচ্ছি। কাল (বুধবার) জাঙ্গিরাই বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মুমিত আসুক চত্বরে অর্থ সংগ্রহ করব। পরে জমানো টাকা দিয়ে বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতা করা হবে।’