বালিয়াকান্দিতে পোলিং কর্মকর্তাদের তালিকায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক

রাজবাড়ী জেলার মানচিত্র

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের পোলিং কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় রয়েছেন বিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক। তিনি একটি হত্যা মামলায় হাজতবাসও করেছেন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা বিষয়টি জানতেন না। ওই শিক্ষকের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।

ওই শিক্ষকের নাম সাজিদ হাসান। তিনি গাড়াকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। তাঁর বাড়ি নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২১ মে ভোট গ্রহণ হবে। এ উপলক্ষে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা (পোলিং অফিসার) হিসেবে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। পোলিং তালিকার ৩৫০ নম্বরে সাজিদ হাসানের নাম রয়েছে। ১৪ মে বালিয়াকান্দি পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে তিনি অন্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন।

গাড়াকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকেরা বলেন, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় চর ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আবদুল আজিজ মহাজন (৪৫) নামে শ্রমিক লীগের এক নেতাকে গত বছরের ১৫ অক্টোবর রাতে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহতের বড় ভাই আবদুর রহমান মহাজন বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা করেন। মামলায় সাজিদ এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন।

গাড়াকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসমে আরা বেগম বলেন, গত বছর ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তিনি এখন জামিনে আছেন। তাঁকে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে হাজির হতে হয়। কিন্তু তিনি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন না। শিক্ষকের নিয়মিত হাজিরা খাতায়ও তিনি সই করেন না। ওই শিক্ষকের জন্য আলাদা একটি হাজিরা খাতা তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাজিদ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আবারও তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, পোলিং কর্মকর্তাদের নাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কাছে চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের উচিত ছিল সাময়িকভাবে বরখাস্ত কোনো শিক্ষকের নাম তালিকায় না দেওয়া। এই বিষয় তাঁদের জানা ছিল না। ওই শিক্ষকের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা হলেন আবুল কালাম আজাদ (আনারস প্রতীক) ও এহসানুল হাকিম ওরফে সাধন (মোটরসাইকেল প্রতীক)। আবুল কালাম আজাদ বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এহসানুল হাকিম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এহসানুল হাকিমের চাচাতো ভাই রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।