দৌলতদিয়ায় ১৭ কেজির কাতলা ২২ হাজার টাকায় ও মহাবিপন্ন বাগাড় ১৩ হাজারে বিক্রি
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে ধরা পড়া ১৭ কেজি ৫০০ গ্রামের একটি কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার টাকায়। ১০ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন একটি বাগাড় বিক্রি হয়েছে ১৩ হাজার টাকায়। আজ শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাট বাজারে মাছ দুটি বিক্রি হয়।
কাতলা মাছটি সকাল সাতটার দিকে একদল জেলের জালে ধরা পড়ে। মাছটির ওজন ১৭ কেজি ৫০০ গ্রাম। বাগাড়টি পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ডাকাতপাড়া এলাকায় সকাল ১০টার দিকে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। এটির ওজন ছিল প্রায় ১০ কেজি। মাছ দুটি কেনেন দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা। এর মধ্যে কাতলা মাছটি দুপুরে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে তিনি বিক্রি করেছেন। তবে বাগাড়টি এখনো বিক্রি করতে পারেননি।
স্থানীয় মৎস্যজীবী ও আড়তদারেরা জানান, সকালে ফেরিঘাট বাজারের দুলাল মণ্ডলের আড়ত থেকে ১৭ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কাতলা মাছটি নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি ধরে ২২ হাজার ৭৫০ টাকায় কেনেন চান্দু মোল্লা। চান্দু মোল্লা বলেন, কাতলা মাছটি বেলা ২টার দিকে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা লাভে ২৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন। ইতিমধ্যে মাছটি পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এদিন সকাল ১০টার দিকে ফেরিঘাটের অদূরে ডাকাতপাড়ার পদ্মা নদীতে জাল ফেলেন দৌলতদিয়া ব্যাপারী পাড়ার জেলে নিজাম হাওলাদার। তাঁর জালে ধরা পড়ে বিপন্ন মাছ ১০ কেজি ওজনের বাগাড়। বাগাড়টি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাট বাজারের আনোয়ার হোসেন ওরফে আনুখার আড়ত ঘরে বিক্রির জন্য আনেন নিজাম। এ সময় নিলামে তোলা হলে বাগাড়টি কিনে নেন চান্দু মোল্লা।
চান্দু মোল্লা বলেন, নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি ধরে ১৩ হাজার টাকা দিয়ে তিনি বাগাড় মাছটি কিনে নিয়েছেন। বাগাড়টি এখনো বিক্রি করতে পারেননি। কিছু টাকা লাভ পেলে এটি বিক্রি করে দেবেন।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাগাড় শিকার করা, ধরা ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে।
এ ধরনের নিষিদ্ধ মহাবিপন্ন বাগাড় প্রকাশ্যে শিকার ও নিলামে বিক্রি হলেও এসব বন্ধে মৎস্য বিভাগ বা উপজেলা প্রশাসনের তেমন ভূমিকা দেখা যায় না। এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাগাড় ধরা পড়া বা বিক্রির বিষয়টি জানার পর সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।