বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ভীত হয়ে সরকার, সরকারি দল ও প্রশাসন বিভিন্নভাবে সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে ২২ তারিখের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা যতই আঘাতপ্রাপ্ত হোক না কেন, যে জনস্রোত দেখা দিয়েছে, যে জন-আকাঙ্ক্ষা দেখা দিয়েছে, যে জন-উৎসাহ দেখা দিয়েছে, সেটা কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী অথবা অন্য কোনো দল এই জন-উৎসাহ ঠেকাতে পারবে না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা নগরের কে ডি ঘোষ রোডের বিএনপির কার্যালয়ে দলের বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামান এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামান বলেন, ‘জ্বালানিসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। পাঁচ গুণ পর্যন্ত দাম বেড়েছে। দেশব্যাপী অস্বাভাবিক নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় বিএনপির সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ বিএনপিও এই দেশে একসময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। তবে এই দিন শেষ দিন নয়, আরও দিন আছে। সরকারের কাছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অনুরোধ করব, আপনারা বাংলাদেশের প্রশাসন। কোনো দলীয় প্রশাসন না। আপনারা কোনো দলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যে সমাবেশ করতে চলেছি, আপনারা তাতে সহযোগিতা করবেন।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ করে শামসুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির ধারাবাহিক এই সমাবেশ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের ওপর আঘাত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে আমাদের নেতা-কর্মীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এখন খুলনায় যানবাহন বন্ধ করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে নদীপথেও আমাদের বাধা দেওয়া হবে। খুলনায় আমাদের মাইক কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বাসায় বাসায় গিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিকুল আলম বলেন, সমাবেশকে সামনে রেখে খুলনার সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ট্রলার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এই সরকার বিএনপির মহাসমাবেশকে বানচাল করতে চায়। শাসক দল এবং সরকারের প্রশাসন যৌথভাবে অ্যাজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়েছে। গতকাল বুধবার বিএনপির ছয়টি প্রচার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ সকালেও খালিশপুরে বিএনপির প্রচার মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, খুলনার সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা রকিবুল ইসলাম, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।