স্বামী হত্যার দায় দুর্বৃত্তদের ওপর চাপানো স্ত্রী গ্রেপ্তার হলেন আসামি হিসেবে
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ধান্যঘরা গ্রামের মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী বাবর আলী (৪৫) হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী মহিমা খাতুনকে (৩৮) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে মহিমা তাঁর স্বামীকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাঁসুয়া তিনি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
আজ রোববার দুপুরে দর্শনা থানায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকিয়া সুলতানা। এ সময় দর্শনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানউল্লাহ আমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়িতে বাবর আলীকে কোপানোর ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দুইটায় তিনি মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের পর বাবর আলীর স্ত্রী মহিমা খাতুন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, সেদিন রাতে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বাবর আলী বারান্দায় শুয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বাড়িতে ঢুকে বাবর আলীকে টেনেহিঁচড়ে উঠানে নামিয়ে কোপ মারেন। স্বামীর ওপর হামলার সময় মহিমা চিৎকার দিলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাবর আলীর ছোট ভাই মো. সাবের আলী দর্শনা থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাবর আলীর সঙ্গে মহিমা খাতুনের প্রায়ই সমিতির কিস্তির টাকা লেনদেন নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এর জেরেই মহিমা খাতুন এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারেন।
আজ আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ঘটনার বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতা ও স্বাক্ষ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী মহিমাকে শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মহিমা নিজেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাঁসুয়াটি বের করে দেন।
ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, মহিমা স্বীকার করেছেন, ৯ জুন রাত পৌনে ১টার দিকে পারিবারিক কলহ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে বাবর আলীর কাছে থাকা ধারালো হাঁসুয়া কেড়ে নিয়ে তাঁর গলায় কোপ মারেন। পরে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বাবর আলী মৃত্যুবরণ করেন।