২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার বদির ‘ব্যক্তিগত ক্যাশিয়ার’ কারাগারে

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রানওয়েতে থাকা বিমান বাংলাদেশের জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইট থেকে সালাহউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেদ্দাগামী একটি বিমান থেকে সালাহউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র‍্যাব। তিনি কক্সবাজার সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ‘ব্যক্তিগত ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিত। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে র‍্যাব-৯ ও র‍্যাব-১৫–এর যৌথ অভিযানে তাঁকে আটক করা হয়। রাতেই তাঁকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিমানবন্দর থানা পুলিশ আজ মঙ্গলবার দুপুরে সালাহউদ্দিনকে আদালতে পাঠায়। পরে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। সেগুলোতে তিনি এজহারনামীয় আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে ঘর পোড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আদালতে তোলার সময় তিনটি মামলার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আটকের পর উখিয়া থানাও যোগাযোগ করে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে সিলেট বিমানবন্দর হয়ে হজে যাওয়ার জন্য ইহরামের কাপড় পরেন সালাহউদ্দিন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বিমান থেকে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সালাউদ্দিন উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের জাদিমোরার এলাকার বাসিন্দা। তিনি রাজাপালং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব রয়েছেন। আজ সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো র‍্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় থাকা শীর্ষ মাদক পাচারকারী আবদুর রহমান বদির মাদক ব্যবসার হিসাব পরিচালনা করতেন সালাউদ্দিন। তিনি নিজেও ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত।

র‍্যাব ১৫-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী বদির মাদক ব্যবসার টাকাপয়সার হিসাব রাখতেন সালাউদ্দিন। তিনি বদির ক্যাশিয়ার ছিলেন বলে জানা গেছে। দেশ থেকে পালানোর সময় সিলেট বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।

র‍্যাব সূত্র জানায়, সালাউদ্দিনের ছোট একটি কাপড়ের দোকান আছে। তবে তাঁর আয়ের মূল উৎস ইয়াবা। সালাউদ্দিনের বাবা পেশায় একজন সাধারণ গাড়িচালক। কিন্তু মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে কয়েক বছরের ব্যবধানে সালাউদ্দিন রীতিমতো বিপুল অর্থসম্পত্তির মালিক বনে যান। জমি, বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি, কক্সবাজার, ঢাকায় ফ্ল্যাটসহ অনেক সম্পদ রয়েছে তাঁর। র‍্যাব কর্মকর্তা আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান বদি ও তাঁর সহযোগীরা। ২০ আগস্ট চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমান বদি। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাদক চোরাচালানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আবদুর রহমান বদির নাম রয়েছে। তালিকায় ‘মাদকের গডফাদার’ হিসেবে বদির চার ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম রয়েছে।