কুষ্টিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গুলিতে একজন নিহত, আহত ১৫

গুলিপ্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার মিরপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের নওদা খাদেমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তৌহিদুল ইসলাম (৪৫) নওদা খাদেমপুর গ্রামের মৃত মোজাহার আলী সরদারের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন একই এলাকার জাহাঙ্গীর সরদার, রুবেল সরদার, আলামিন, জুয়েল, রিজভী, আকিজ, লিটু, জহুরুল সরদারসহ ১৫ জন। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিতে নিহতের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও নদীর চর দখল নিয়ে নওদা খাদেমপুর গ্রামের গাইন ও সরদার বংশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গাইন বংশের নেতৃত্ব দেন টিপু গাইন ও মান্নান গাইন এবং সরদার বংশের নেতৃত্বে আছেন আতিয়ার সরদার ও খালেক সরদার। গ্রামের চলাচলের পাকা সড়ক গাইন বংশের বসবাসের এলাকার মধ্যে। অভিযোগ রয়েছে, সড়ক দিয়ে যাতায়াতে অনেক সময় সরদার বংশের লোকজনকে মারধর করেন গাইন বংশের লোকজন।

মারধরের জেরে রোববার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে সরদার বংশের তৌহিদুলকে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে গাইন বংশের লোকজনের বিরুদ্ধে। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৌহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনার পর হামলা ও লুটপাটের আশঙ্কায় জিনিসপত্র নিয়ে গ্রাম ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে ঘটনার পর গাইন বংশের লোকজন এলাকা থেকে পালিয়েছেন বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার বলেন, গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। অন্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই সুজন আলী সরদার বলেন, ‘গাইন বংশের লোকজন আমার চাচার বাড়িতে হামলা চালানোর সময় বড় ভাইকে গুলি করে। দীর্ঘদিন ধরে চরের জমি দখলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এলাকার কিছু লোকজনের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ চলছে।’

মিরপুর থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শুধু চর দখল নয়, বিভিন্ন বিষয় নিয়েই দুই বংশের ভেতর বিরোধ দীর্ঘদিনের। সড়কে চলাচল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে এসপিসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। এলাকার মানুষ ভয়ে তাঁদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো থানায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।