বগুড়ায় র‍্যাবের পোশাক পরে কলেজছাত্রকে অপহরণের ঘটনায় একজন শনাক্ত

গভীর রাতে র‍্যাবের ভেস্ট পরা তিনজন ব্যক্তি ওই ছাত্রকে নির্যাতন করতে করতে অপহরণ করে নিয়ে যায়ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

বগুড়ায় গভীর রাতে এক কলেজছাত্রকে র‍্যাবের পোশাক পরে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের নেপথ্যে জড়িত চক্রের এক সদস্যকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের ফাঁদ পেতে দুই নারীকে গ্রেপ্তারের পর অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় তারা। আজ সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, র‍্যাবের পোশাক পরে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত সাঈদ হাওলাদার (৫০) নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগাতি গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায়। সাঈদ হাওলাদার পেশায় দরজি। তিনি গাজীপুরে পুলিশের পোশাক তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর তার পরিবারের কাছে সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের ৭৫ হাজার টাকা নেওয়া হয় সাভারের একটি বিকাশ নম্বরে। এক লাখ টাকা পাঠানোর জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার একটি বিকাশের দোকানের নম্বর দেওয়া হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশ আগে থেকেই বিকাশের ওই দোকানে ওত পেতে থাকে। এরপর সেখানে মুক্তিপণের টাকা তোলার জন্য সাঈদ হাওলাদার তাঁর মেয়ে সাদিয়া আকতারকে (২০) পাঠান। পুলিশ তাঁকে আটক করে। এরপর মেয়ের সঙ্গে আসা মা রুমা খাতুনকেও আটক করা হয়। মা-মেয়েকে আটকের পরপরই সাঈদ হাওলাদারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী-কন্যা যোগাযোগ করেন। এর পরপরই অপহরণকারীরা অপহৃত কলেজছাত্র ফেরদৌসকে মুক্তি দেয়। নরসিংদীর মাধবদী থেকে ফেরদৌসকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন

বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক সাঈদ হাওলাদারের স্ত্রী রুমা খাতুন ও মেয়ে সাদিয়া আকতারকে বগুড়া সদর থানায় করা অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। বগুড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন খাতুন পরে দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

র‍্যাবের পোশাক পরা ব্যক্তিরা কারা, জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার মা-মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের সঙ্গে সাঈদ হাওলাদার জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে। মুক্তিপণের ৭৫ হাজার টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেছে সাভারের একটি বিকাশের দোকানে। র‍্যাবের পোশাক পরে কলেজছাত্র ফেরদৌস অপহরণের সঙ্গে ঠিক কতজন জড়িত, সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওসি বলেন, র‍্যাবের পোশাক পরে বিভিন্ন জেলায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ে সংঘবদ্ধ একটি দলের সদস্য সাঈদ হাওলাদার।