এনআইডিতে মায়ের নামে নানি, কারও বাবার নামে ভুল, সংশোধন না হওয়ায় ক্ষোভ
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন না হওয়ায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহেমদের কাছে ক্ষোভ জানালেন আবেদনকারীরা। আজ সোমবার দুপুরে সার্কিট হাউসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের মতবিনিময় সভা চলাকালে মিলনায়তনের বাইরে পেয়ে তাঁকে ঘিরে ধরেন তাঁরা।
আবেদনকারীদের অভিযোগ, সংশোধনের আবেদন করেও জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে কোনো সমাধান পাননি। এ কারণে সিইসি আসছেন শুনে সার্কিট হাউসে ভিড় করেন এনআইডি সংশোধনের আবেদনকারী অন্তত ৩০ জন বিভিন্ন বয়সী ব্যক্তি।
আবেদনকারীরা কেউ নিজের, কেউবা স্বজনের এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেছেন নির্বাচন কমিশন বরাবর। এই আবেদনগুলোর এখনো সুরাহা হয়নি বলে জানান।
আজ বেলা ১১টায় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভাটি শুরু হয়। সিইসি শুরুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এরপর সভার কাজ শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে এনআইডি সংশোধনের আবেদনকারীরা ভিড় করেন সার্কিট হাউস মিলনায়তনের বাইরে। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে ছিল আবেদনের অনুলিপি। একপর্যায়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কয়েকজন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদকে বিষয়টি জানান। পরে তিনি সভা ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্য মিলনায়তনের বাইরে আসেন। তখন তাঁকে আবেদনকারীরা ক্ষোভ জানান।
রাঙ্গুনিয়া থেকে আসা নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, এনআইডিতে তাঁর মায়ের নামের স্থানে স্ত্রীর নাম উঠেছে। এটা সংশোধনের জন্য তিনি কয়েক বছর আগে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো তার কোনো সুরাহা হয়নি।
মিরসরাই থেকে আসা শওকত হোসেন ভূঁইয়া নামের এক যুবক বলেন, তাঁর মায়ের নামের স্থানে এসেছে নানির নাম। ১০ মাস আগে সংশোধনের আবেদন করেন। কিন্তু এখনো সংশোধন হয়নি।
মোহাম্মদ পারভেজের এনআইডিতে বাবার নাম নুরুল হাকিমের জায়গায় ভুলবশত আসে নুরুল আলম। ২০২৩ বছরের ১৪ নভেম্বর তা সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখনো তা হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যফেরত মো. ইসমাইল নামের অপর একজন বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট ও এনআইডির জন্মতারিখে ভুল আছে। আমি সংশোধনের আবেদন করেছি এক বছর আগে। এখন পাসপোর্টের মেয়াদ নেই। তাই আবার বিদেশে যেতে পারছি না।’
ইসমাইল অভিযোগ করে প্রথম আলোকে বলেন, শত শত লোক প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচন কার্যালয় কাজগুলো নিয়ে গড়িমসি করছে।
বশির আহমেদকে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন একের পর এক আবেদনকারী। বশির আহমেদ তাঁদের বিষয়গুলো বিবেচনা করে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, জেলা কার্যালয়ে সদ্য যোগ দিয়েছেন। দ্রুততর সময়ের মধ্যে আবেদনগুলো বিবেচনা করে সমাধান দেওয়া হবে।
পরে আবেদনকারীরা সার্কিট হাউস ছেড়ে চলে যান। তাঁদের বিদায় করে বশির আহমেদ পুনরায় সিইসির সভায় ঢুকে পড়েন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অধীন বর্তমানে ৫৩ হাজার ২৯২টি এনআইডি সংশোধনের আবেদন রয়েছে।