রংপুরের পীরগাছায় হিমালয়ান গৃধিনী শকুন উদ্ধার

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর এলাকা থেকে হিমালয়ান গৃধিনী শকুন উদ্ধার করে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম। শনিবার কারমাইকেল কলেজ চত্বর তোলা
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের পীরগাছা থেকে একটি পরিযায়ী হিমালয়ান গৃধিনী (Himalayan Griffon) শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের একটি গাছে আটকে থাকা অবস্থায় এই শকুন উদ্ধার করা হয়।

ওই ইউনিয়নের খামার নয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও রংপুর কারমাইকেল কলেজের ছাত্র হামিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার আগে শকুনটি রংনাথ দাখিল মাদ্রাসার পাশে হঠাৎ আকাশ থেকে পড়ে। আহত শকুনটিকে মোস্তফা নামের ব্যক্তি উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আবার উড়িয়ে দেন। কিন্তু শকুনটি এক কিলোমিটার দূরে টেপার ব্রিজ এলাকায় আবার একটি গাছে আটকা পড়ে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ও ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে শকুনটি উদ্ধার করা হয়। আজ শনিবার সকালে শকুনটি রংপুর কারমাইকেল কলেজ মাঠে নিয়ে আসা হয়। এ সময় শকুনটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করেন। ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ দলের পীরগাছা কমিটির সদস্য নূর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শকুনটির উচ্চতা প্রায় তিন ফুট। পাখার দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ও ওজন ১০ কেজি। শকুনটি আজ বিকেলে দিনাজপুরের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যাকেন্দ্র রেখে আসা হয়েছে।

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর এলাকা থেকে হিমালয়ান গৃধিনী শকুন উদ্ধার করে কারমাইকেল কলেজ চত্বরে আনান হয়। শনিবার বিকেলে একে দিনাজপুরের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যাকেন্দ্র রেখে আসা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

সিংড়া শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যাকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী বেলাল হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, শকুনটি সেখানে ভালো আছে।

বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশে ৭ প্রজাতির শকুন ছিল। এর মধ্যে রাজশকুন পুরোপুরি বিপন্ন হয়ে গেছে। এ দেশের স্থায়ী বাংলা শকুন ও সরু ঠোঁট শকুনও রয়েছে খুবই কম। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএনের হিসাবে, বাংলাদেশে ২৬০টির মতো বাংলা শকুন টিকে আছে। এ ছাড়া দেশে তিন প্রজাতির পরিযায়ী শকুন দেখা যায়। এর মধ্যে হিমালয়ান গৃধিনী অন্যতম।

এ বিষয়ে কারমাইকেল কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল্লাহ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, শকুন পরিযায়ী পাখি নয়। এই পাখি এ অঞ্চলের বনজঙ্গলে থাকত। কিন্তু খাদ্যসংকট ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে শকুন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময় ভারত বা অন্যান্য দেশ থেকে শকুন উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে আসে। এর প্রধান কারণ খাদ্যসংকট। এর বাইরে সঙ্গী খোঁজা বা পথ ভুল করে শকুন আসতে পারে।