সিলেটে আগামীকাল শনিবার দিনব্যাপী বাসসহ সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও জেলা সড়ক পরিবহন বাস মালিক সমিতি। তবে ধর্মঘট শুরুর আগের দিন থেকেই সিলেটে অনেকটা অঘোষিত ধর্মঘট চলছে।
আজ শুক্রবার সকালে সিলেট কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাস অলস অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। যানবাহন কম থাকায় যাত্রীসংখ্যাও কম দেখা গেছে। দূরপাল্লার কয়েকটি পরিবহনের পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের অনেক পরিবহনও আজ চলছে না।
সিলেট থেকে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে যাতায়াত করা হবিগঞ্জ-সিলেট এক্সপ্রেস পরিবহনের বাস বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া কদমতলী থেকে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী বাসের সংখ্যাও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে আজ সকালে বাস ধর্মঘট শুরু হওয়ায় জেলাগুলো থেকে কোনো বাস সিলেটে আসেনি।
আগামীকাল শনিবার সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির গণসমাবেশের দিন দিনব্যাপী বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা সড়ক পরিবহন বাস মালিক সমিতি। এই ধর্মঘট ডাকার পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির নেতাদের। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশে উপস্থিত হতে যাতে বিড়ম্বনায় পড়েন, সে জন্যই এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির গণসমাবেশের আগে এভাবেই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল।
আজ সকালে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস ও ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করা হানিফ পরিবহনের বাস কাউন্টার বন্ধ। এ ছাড়া সিলেট জেলার অভ্যন্তরে যাতায়াত করা বাসের সংখ্যাও কম। সিলেট থেকে জাফলং ও ফেঞ্চুগঞ্জে যাতায়াত করা বাসের সংখ্যা সীমিত বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
এদিকে সিলেট নগরেও অটোরিকশা চলাচল কিছুটা কম দেখা গেছে। বেলা ১১টার দিকে নগরের হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েকজন যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ যাত্রীর গন্তব্য হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।
হবিগঞ্জের যাত্রী দেলোয়ার হোসেন বলেন, হবিগঞ্জের গাড়ি বন্ধ। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসগুলোতে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে আবার কোনো পরিবহনে উঠে হবিগঞ্জে যাবেন। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী বাসও কম। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তিনি কোনো বাসের দেখা পাননি।
এদিকে রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মঘট ডাকায় অনেক শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এক দিন ধর্মঘট ডাকা হলেও আগের দিন থেকেই বাস বন্ধ হয়ে আছে। রোজগার কমে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ঢাকাগামী এক বাসের শ্রমিক সোলেমান আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম, শনিবার থেকে ধর্মঘট। নেতারা সবাই রাজনীতি করে, ধর্মঘট থাকে। কিন্তু আমাদের শ্রমিকদের কেউ দেখে না।’
জানতে চাইলে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. জিয়াউল কবির বলেন, সিলেটে আজ কোনো ধর্মঘট নেই। তবে সিলেটের অণ্য তিন জেলায় ধর্মঘট রয়েছে। অন্য জেলাগুলোতে ধর্মঘট থাকায় সড়কে যানবাহন কম মনে হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু মালিক অন্য জেলায় ধর্মঘট শুনে নিজেদের সিদ্ধান্তে গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।