ভ্যান চলাচলের পথ নেই, বাঁশের সাঁকোর ওপর সন্তান প্রসব

বাঁশের সাঁকোর জন্ম নেওয়া নবজাতক। শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সুতিরপাড় এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বাঁশের সাঁকোর ওপর এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন। উপজেলার বোয়ালমারী বেড়িবাঁধের খাটিয়ামারী-রৌমারী সড়কের সুতিরপার এলাকায় ওই বাঁশের সাঁকোটি ভ্যান চলাচলের অনুপযোগী। সাঁকোটি হেঁটে পার হওয়ার সময় সাঁকোর ওপরই ওই নারী সন্তান প্রসব করেন।

শনিবার বেলা ১১টায় খাটিয়ামারী-রৌমারী সড়কে সুতিরপার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সন্তান প্রসব করা ওই নারীর নাম বিলকিস বেগম। তিনি উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের সাইজুদ্দিনের স্ত্রী।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে বিলকিস বেগমের প্রসববেদনা উঠলে স্বজনেরা তাঁকে ভ্যানযোগে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সুতিরপার বাঁশের সাঁকোটি ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় স্বজনেরা তাঁকে ভ্যান থেকে নামিয়ে হেঁটে সাঁকোটি পার হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সাঁকোর মাঝখানে বড় একটি ভাঙা থাকায় ওই প্রসূতি পার হতে পারেননি। সেখানে আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর ওই নারীর প্রচণ্ড প্রসববেদনা উঠলে বাঁশের সাঁকোর ওপরেই তিনি শুয়ে পড়েন এবং একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন।

প্রসূতি নারীর ভাবি আমিনা বেগম বলেন, সকালে বাড়িতে প্রসবব্যথা উঠলে বিলকিস বেগমকে ভ্যানে করে রৌমারী হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সুতিরপার বাঁশের সাঁকোটি ভাঙা থাকায় সেখানে ভ্যান থেকে বিলকিসকে নামানো হয়। সাঁকোটি পার হতে না পারায় সেখানেই সন্তানের জন্ম দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের বন্যায় খাটিয়ামারী-রৌমারীর পাকা রাস্তাটি সুতিরপার নামক স্থানে ভেঙে যায়। পরে চলাচলের জন্য সেখানে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের অস্থায়ী এই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সাঁকোটি সংস্কার না হওয়ায় এবং সেখানে স্থায়ী সেতু না করায় ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সাঁকো দিয়ে ৪ নম্বর রৌমারী ইউনিয়নের বামনের চর, রতনপুর, খাটিয়ামারী, নওদাপাড়া, বল্লাপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, চান্দারচর, সবুজপাড়া, মাঝিপাড়া (নমদাসপাড়া) ও ২ নম্বর শৌলমারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়, মোল্লার চর, বেহুলার চর, ফকিরপাড়া, মন্ডলপাড়া গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য দাবি করা হলেও সেখানে কোনো স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়নি।