‘গলা নামিয়ে দেওয়ার’ হুমকি, শাজাহান খানের ছেলে আসিবুরকে শোকজ
নৌকার বাইরে গিয়ে কেউ কোনো কথা বললে ‘গলা নামিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ (রাজৈর-সদর একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নোটিশে আগামী রোববার বেলা ১১টায় অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলায় তিনটি আসনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা জজ (ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মো. শরিফুল হকের স্বাক্ষরিত নোটিশ আজ শুক্রবার আসিবুর রহমান খানের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিচারকের পেশকার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুরের টেকেরহাটে নির্বাচনী প্রচারে যান শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য। এলাকাটি মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদর একাংশ) আসনের মধ্যে পড়েছে। ওই আসনের নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের পক্ষে নৌকায় ভোট চাইতে গিয়ে আসিবুর রহমান খান ওই বক্তব্য দেন।
নোটিশ ও আদালত সূত্র জানায়, আসিবুর রহমান খানের দেওয়া বক্তব্যের ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে ভোটারদের উদ্দেশ্যে আসিবুরকে বলতে শোনা যায়, ‘নৌকার বাইরে যদি একজনও কোনো রকম কথা বলে, ইভেন গলা উঁচু করে কথা বলার চেষ্টা করে, আমি তাদের বলতে চাই, আপনাদের গলা আমরা কীভাবে নামাব, সেটা আমরা ভালো করেই জানি।’ এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়। এমন বক্তব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮–এর ১১ (৫) ও ১২ বিধির পরিপন্থী বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘নৌকার বাইরে কেউ কথা বললে গলা কীভাবে নামাতে হয়, জানি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের নজরে আসে। পরে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাননী খানের বিষয়টি ব্যবস্থা নেওয়া জন্য নির্দেশনা দেন। পরে নাননী খান নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠান।
এ সম্পর্কে সহকারী রিটার্নিং ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাননী খান বলেন, ‘ওই ব্যক্তি (আসিবুর রহমান খান) মাদারীপুর-৩ আসনে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতির সৃষ্টি করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে ভিডিও চিত্রের সিডিসহ তথ্য প্রমাণ পাঠানো হয়েছে। তিনি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’