শেরপুরে আগুনে দগ্ধ ব্যক্তির লাশ গোপনে পাঠানো হয়েছিল শাহজাদপুরে
বগুড়ার শেরপুরে আগুনে পুড়ে নিহত এক ব্যক্তির লাশ সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরে থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শাহজাদপুরের পুলিশের সহযোগিতায় লাশটি উদ্ধার করে আজ সোমবার ভোরে থানায় নিয়ে আসে শেরপুর থানা-পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
দগ্ধ লাশটিকে নিজের ছোট ভাই বলে দাবি করেছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের গঙ্গা প্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে পুড়ে নিহত ব্যক্তিটি তাঁর ছোট ভাই রকমত ইসলাম (৩১)। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টায় শেরপুর থেকে একটি ট্রাকে করে লাশটি সিরাজগঞ্জে নেওয়া হয়।
গত শনিবার রাত ১১টার দিকে শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের হাসপাতাল সড়ক এলাকায় একটি তেলের দোকানে দগ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত হন। ধারণা করা হচ্ছে, একটি লরি থেকে দোকানটিতে জ্বালানি সরবরাহের সময় আগুন লেগে যায়। এ সময় ওই লরিতে চালকের সহায়তাকারী দগ্ধ হয়ে নিহত হন।
গত শনিবার রাত ১১টার দিকে শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের হাসপাতাল সড়ক এলাকায় একটি তেলের দোকানে দগ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত হন। ধারণা করা হচ্ছে, একটি লরি থেকে দোকানটিতে জ্বালানি সরবরাহের সময় আগুন লেগে যায়। এ সময় ওই লরিতে চালকের সহায়তাকারী দগ্ধ হয়ে নিহত হন।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, শেরপুরে যে দোকানে আগুন লেগেছিল, ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক গতকাল রাতে গোপনে লাশটি শাহজাদপুরে তেলের লরিটির মালিকের কাছে পাঠিয়েছিলেন। পরে ওই মালিক একটি ট্রাকে করে লাশটি তাঁদের বাড়ির উদ্দেশে পাঠান। লাশটি দেখে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে গতকাল রাতেই শাহজাদপুর থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে শাহজাদপুর থানা-পুলিশ শেরপুর থানা-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশটি শেরপুরে নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার রাতে শেরপুরে লিমন এন্টারপ্রাইজ নামের জ্বালানির ওই দোকানে আগুন লাগে। এর আগে একটি ভর্তি তেলের লরি দোকানটির সামনে এসেছিল। গাড়িটি থেকে সেখানে তেল নামানো হচ্ছিল। কোনো ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা অনুসরণ না করে ওই দোকানে পেট্রল, ডিজেল, অকটেন মবিলসহ গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার ও গাড়ির টায়ার বিক্রি করা হচ্ছিল।
নিহত ওই যুবককে নিজেদের পরিবারের সদস্য বলে দাবি করা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রথম আলোকে জানান, রকমত ইসলাম একটি তেলের লরিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শাকতোলা গ্রামের হারুন ফরিদ নামের এক ব্যক্তি ওই লরির মালিক। ওই গাড়িতে গত শনিবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুরে তেল ভর্তি করে লরি নিয়ে চালকের সঙ্গে শেরপুর শহরে যান রকমত। শহরের হাসপাতাল সড়কে শনিবার রাতে একটি তেলের দোকানে আগুনের দগ্ধ হয়ে রকমত নিহত হন। তবে পরিবারের কারও কাছে এ কথা জানায়নি ওই দোকান ও লরির মালিক। তাঁদের আড়ালে শেরপুরের ওই দোকানের মালিক লাশটি গতকাল রাতে শাহজাদপুরের লরিমালিকের কাছে পাঠান।
লাশটি সহজে চেনার সম্ভব নয়। তবে শাহজাদপুরে গঙ্গা প্রসাদ গ্রামের রফিকুল ইসলাম একে নিজের ছোট ভাইয়ের লাশ বলে দাবি করেছেন। শেরপুর থেকে একটি ট্রাকে করে লাশটি গতকাল দিবাগত রাতে লাশটি পাঠানো হয়েছিল। যে ট্রাকে করে লাশটি বহন করে শাহজাদপুরে নেওয়া হয়েছে, ওই ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী এমনটি বলেছিলেন রফিকুল ইসলামের কাছে।শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক রকিব হোসেন
লিমন এন্টারপ্রাইজ নামের ওই দোকানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানান শেরপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার হাউস কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হয়তো আগুনে দগ্ধ ওই ব্যক্তিকে আগেই অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
লাশ উদ্ধারের বিষয়ে শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি সহজে চেনার সম্ভব নয়। তবে শাহজাদপুরে গঙ্গা প্রসাদ গ্রামের রফিকুল ইসলাম একে নিজের ছোট ভাইয়ের লাশ বলে দাবি করেছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, শেরপুর থেকে একটি ট্রাকে করে লাশটি গতকাল দিবাগত রাতে লাশটি পাঠানো হয়েছিল। যে ট্রাকে করে লাশটি বহন করে শাহজাদপুরে নেওয়া হয়েছে, ওই ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী এমনটি বলেছিলেন রফিকুল ইসলামের কাছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি আজ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।