ষড়যন্ত্র বন্ধে এখন আমাদের জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই: চরমোনাই পীর

বরিশালের চরমোনাই দরবারের ওলামা সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন চরমেনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার সকালে
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ‘দেশে বর্তমানে একটি কঠিন অবস্থা বিরাজ করছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবাইকে কাজ করতে হবে। এখন আমাদের জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। দেশকে স্থিতিশীল রাখতে সবাইকে কাজ করে যেতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’

চরমোনাই দরবারের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলনে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এমন মন্তব্য করেন। মাহফিলে দেশের বিশিষ্ট আলেম, ওলামা, ইসলামী বক্তা ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

চরমোনাই পীর হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে মায়ের কোলে সন্তান যেমন শান্তিতে-নিরাপত্তায় থাকে, আপনারাও তেমন আছেন। কিন্তু কেউ কেউ নিজেদের হীনস্বার্থে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আপনাদের ব্যবহার করছে, এ জন্য আপনারা সতর্ক থাকুন। ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না।’

চরমোনাই পীর এ সময় আসা আলেম-ওলামা ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি স্বার্থ-দ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে কাজ করারও আহ্বান জানান।

ওলামা সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব হাফেজ ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমির বাহাদূরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ইসলামী বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, কমলনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খালিদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ প্রমুখ।

সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদের অবজ্ঞা করা যাবে না। সব দলের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সব কাজ করতে হবে। ছোটখাটো বিরোধের কারণে যাতে আমরা নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হই, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের স্লোগান “নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই” এই স্লোগানকে বাস্তবায়ন করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে নতুন দেশ গড়তে হবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, ‘চরমোনাই মাহফিল ১০০ বছর অতিক্রম করেছে। ঐক্যের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব ইনশা আল্লাহ। আমরা কোরআনের শাসন চাই। এ জন্য আমরা সবাই মিলে এক হয়ে কাজ করব।’

খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ বলেন, ‘ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হব, ঐক্যবদ্ধ থাকব।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্টের পরাজিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা দেশে ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় দাস দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছেন।’

গতকাল বুধবার বরিশালের কীর্তনখোলা তীরে চরমোনাই দরবারে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক মাহফিল। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যোগ দিয়েছেন। আগামী শনিবার সকালে আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী মাহফিল শেষ হবে।